বাংলা৭১নিউজ, মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে শ্রেণি কক্ষে হাসি দেয়ার কারনে শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে ৫ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রতনাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা শিক্ষা অফিস।
এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিক্ষার্থী সম্পাকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। আহত সম্পা শহরের পানিছত্র এলাকার সিরাজুল হক হাওলাদারের মেয়ে ও ৯১নং দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
আহত শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগে জানান, শহরের ৯১নং দরগাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরতির পর সোমবার দুপুরে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নিতে প্রবেশ করেন শিক্ষিকা দিল আফরোজ রতনা।
শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকা সকলে দাঁড়িয়ে শিক্ষিকাকে সম্মান প্রদর্শণ করে। এ সময় ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সম্পা আক্তার (১১) দুষ্টুমিতে হেসে ফেলে। এতে শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীকে বেত্রাঘাত করেন। বেত্রাঘাতের এক পর্যায়ে শরীরের বাম চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সম্পাকে তার সহপাঠিরা বাসায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরে মঙ্গলবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্পাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থী সম্পা বলে, ম্যাডামকে মারতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ম্যাডাম শরীরের একাধিক স্থানে বেত দিয়ে পিটিয়েছে। আর দুষ্টুমি করবো না ম্যামকে বললেও ম্যাম আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
আহত শিক্ষার্থীর বাবা সিরাজুল হক হাওলাদার বলেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমাদেরকে চাপ দেয়া হচ্ছে। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ এখন কি হবে কিছুই জানিনা। এ ঘটনা আর যেন না ঘটে, তার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
মাদারীপুর চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসক এআর অমিত বলেন, ওই শিক্ষার্থীর চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে। আর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না নিলে চোখ নষ্ট হয়ে যাবার শঙ্কা রয়েছে। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেছি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. কামরুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। আহত ছাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের আইনগত সহযোগিতার আশ^াস দেয়া হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষা অফিস তাৎক্ষনিক বিদ্যালয় পরিদর্শণ করে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা দিল আফরোজ রতœার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস