আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে গত নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়ানোয় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি ও তার জেরে জ্বালানির চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই তেলের দাম কমছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মার্কিন ডলারের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম এক শতাংশ বা ব্যারেলপ্রতি ৮২ সেন্ট কমে ৮৫ দশমিক ৩৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে লেনদেনের একপর্যায়ে এর দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৪ দশমিক ৫১ ডলারে নেমে গিয়েছিল, যা গত ১৪ জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন।
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামও কমেছে। উপরোক্ত সময়ে ডব্লিউটিআই’র দাম ০ দশমিক ৯ শতাংশ বা ৭৪ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৭৮ ডলার ছিল। তবে লেনদেনের একপর্যায়ে এর দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৭ দশমিক ২১ ডলারে নেমে গিয়েছিল, যা গত ৬ জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন।
বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দাম নিম্নমুখী (সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে অয়েল প্রাইস ডটকম থেকে নেওয়া চিত্র)
গত শুক্রবারের পর থেকে উভয় ধরনের তেলের দাম প্রায় পাঁচ শতাংশ কমেছে।
সোমবার বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের সূচক ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডলারের দাম বেড়ে গেলে অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহার করে ক্রেতাদের জন্য জ্বালানি কেনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে, যার ফলে চাহিদা কমে যায়।
রিফিনিটিভ এইকনের তথ্য বলছে, বর্তমানে তেলের দামের ওপর ডলারের প্রভাব এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় তেল আমদানিকারক অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোয় অর্থনৈতিক মন্দা ও জ্বালানি চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নয়াদিল্লি-ভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রেলিগেয়ার ব্রোকিং-এর সুগন্ধা সচদেবা বলেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রানীতি কঠোর করা এবং দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন ডলারের সর্বোচ্চ দর অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এটিই অপরিশোধিত তেলের দাম কমার মূল কারণ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ