বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ ভারত থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার আইএসও/আইইসি ২৭০০১:২০২২ সনদ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক

বিল জুড়ে সৌন্দর্যের আভা ছড়াচ্ছে রাশি রাশি পদ্ম

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২
  • ৪০৪ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জের বলাকইড় বিল জুড়ে সৌন্দর্যের আভা ছড়াচ্ছে ফুটে থাকা রাশি রাশি পদ্ম। গোলাপী আর সাদা পদ্মের সমাহার দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে। এসব ফুল শুধু বিল নয়, সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে প্রকৃতিরও। 

প্রস্ফুটিত এসব পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য্য দেখতে প্রতিদিনই বিল এলাকায় ছুটে আসেন হাজারো দর্শনার্থী। ইট পাথর আর যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুটা সময়ের জন্য প্রকৃতির স্বাদ নিতে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব আর প্রেমিক প্রেমিকারা ছোট বড় নৌকা নিয়ে ভেসে বেড়ান বলাকইড় বিলে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের বিলবেষ্টিত গ্রাম বলাকইড়। জেলা শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ বিল ইতোমধ্যে ‘পদ্মবিল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ১৯৮৮ সালে বন্যার পর থেকে বর্ষাকালে এ বিলের অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্মে থাকে। এ সময় পুরো বিল গোলাপী আর সাদা রঙের পদ্ম ভরে ওঠে।

সোমবার (২ আগস্ট) বলাকইড় পদ্ম বিলে গিয়ে দেখা গেছে, বাতাসের তালে তালে দোল খাচ্ছে গোলাপি আর সাদা রঙের অসংখ্য পদ্ম ফুল। প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্য সব টুকু ঢেলে দিয়েছে পদ্ম ফুলের প্রতিটি পাপড়িতে। এ বিলের পদ্ম ৬৪টি পাপড়ি মেলে যেন স্বাগত জানায় প্রকৃতি প্রেমীদের। এ বিলে আরো দেখা মিলবে সোনালী রঙ এর লাফালাফি, ঘাস ফড়িংয়ের উড়াউড়ি আর সাপের এঁকে বেঁকে চলা।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পদ্ম ফুলের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে বলাকইড বিলে আসছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকরা। ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুরসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবার-পরিজন আর বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ছুটে আসছেন অনেকেই। তাদের অধিকাংশই ক্যামেরার ফ্রেম বন্দি করে রাখছেন এ বিলের অপরূপ সৌন্দর্য্য।

তবে, দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা এ বিলে আসার সড়কটি প্রশস্ত ও পাকাকরণ এবং সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একই সঙ্গে এখানে মৌসুমি পযর্টন কেন্দ্রে গড়ে তোলার দাবি করেছেন তারা।

আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পযর্ন্ত বলাকইড় বিলে পদ্ম ফুল থাকে। এ সময় এখানকার মানুষের কোনো কাজ না থাকায় এ বিলে জন্ম নেওয়া পদ্ম যেন তাদের জন্য আশির্বাদ হয়েছে। বিলে ঘুরতে আসা শত শত দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে কর্মহীন মানুষ নিজেদের আয় উপার্জন করছেন। এ উপার্জনের ওপর নির্ভর করে চলছে এখনকার অন্তত শতাধিক পরিবার। তবে, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার দর্শনার্থীদের চাপ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় হিমশিম খেতে হয় নৌকার মালিক ও মাঝি মাল্লাদের। এ তিন দিন দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় নৌকার সংকট পড়ায় এ সুযোগে কিছু নৌকার মালিক ও নৌকার মাঝিরা অল্প সময় ঘুরিয়ে বেশি টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দর্শনার্থীরা।

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস অন্তরা ও গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারজানা খান বলেন, বন্ধুদের নিয়ে পদ্মবিল ঘুরতে এসেছিলাম। নৌকায় করে পুরো বিলটা ঘুরলাম। রাশি রাশি পদ্মফুল বিলটাকে পুরো ছেয়ে ফেলেছে। এমন সৌন্দর্য্য দেখার জন্য সবাইকে অন্তত একবার হলেও এ বিলে আসা উচিত। 

শিক্ষার্থী প্রত্যাশা মন্ডল বলেন, ‘আমি ছোট ভাইকে নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে পদ্ম বিলে ঘুরতে এসেছি। পদ্ম ফুল দেখ খুব ভাল লাগছে। অনেক মজা হয়েছে।’ 

পদ্মবিল পাড়ের বাসিন্দা ও নৌকার মালিক ইয়াছিন বেগ বলেন, ‘বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার এখানে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন। ছুটির দিনগুলো নৌকার সংকট তৈরী হয়। তারপরও আমরা সবাইকে চেষ্টা করি বিলটি ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য। দর্শনার্থীদের থেকে যে অর্থ উপার্জন করছি তা দিয়ে আমাদের সংসার চলছে।’

গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, বলাকইড় বিলে পদ্মফুল দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসেন। এই বিলে আসার রাস্তাটি খুব খারাপ। পযর্টন স্পট গড়ে তুলতে বলাকইড় বাজার থেকে বিলে আসার সড়কটি মেরামতের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এ সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু হবে।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, বলাকইড় বিলের প্রায় দু’শ হেক্টর জায়গায় পদ্ম ফুল ফোটে। পদ্মফুলের সৌন্দয্য উপভোগ করতে সবার এখানে আসা উচিত। এখানে আসলে পদ্মফুলের শুধু সৌন্দর্য্য নয়, মধু সংগ্রহ করতে আসা মৌমাছির নাচাচানি, সোনালী ব্যাংক এ দৌঁড়ঝাপ যে কারো মন কেড়ে নেবে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘পদ্মবিলে যাওয়ার রাস্তাটি প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মৌসুমি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্যও আমরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com