সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
নোবেল পুরস্কার আসরের পর্দা নামবে আজ ঢাকায় একদিনে ট্রাফিক আইনে ৭৯৯ মামলা, জরিমানা সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা তাসকিন রাজশাহীতে, লিটন ঢাকায়, মাশরাফি-মাহমুদউল্লাহ পুরোনো দলে বিচ্ছিন্নতাবাদী তাইওয়ানকে ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া চীনের ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তার বদলি গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নয় লেবাননে গেট ভেঙে শান্তিরক্ষীদের ঘাঁটিতে ইসরায়েলি ট্যাংক দীপ্ত টিভির তামিম হত্যার আসামি মাদকের কর্মকর্তা মামুন বরখাস্ত ‘গণঅভ্যুত্থানে ফিরে পাওয়া গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ আগামীকাল প্রকাশ করা হবে এইচএসসির ফল উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ছে, যুক্ত হচ্ছেন আরো দুজন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিকেলে হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাজার তদারকি বিকেলে অনন্যা পান্ডের কোন গোপন ভিডিও ফাঁসের হুমকি দিতেন আরিয়ান? সরকারের কাছে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রতিবেদন জমা দিল কমিটি চীনের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার ফাগুনে ১৬ কোটি হয়ে ফেরার কথা বলে চলে গেলেন কাউসার বেতনের দাবিতে মিরপুরে পোশাকশ্রমিকদের রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভ ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় নিহত ৪, আহত ৬৭ বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৩, আহত ২০

বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকামুখী রোগীর স্রোত, রাজধানীর হাসপাতালে ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থা!

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার ইতোমধ্যে দুই শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে ২০১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। মহামারীর ১৬ মাসে এক দিনে এত মৃত্যু আর কখনো দেখতে হয়নি বাংলাদেশে, যা করোনার ইতিহাসে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। আর মৃতদের মধ্যে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১১৫ জন। 

ওই সময় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ১৬২ জনের। ঢাকা বিভাগেই গত একদিনে ৪ হাজার ৭৩২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৪২ শতাংশের বেশি। খুলনা বিভাগে এক দিনে শনাক্ত রোগী বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৯০০, চট্টগ্রামেও দেড় হাজারের ওপরে। যে ২০১ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৬৬ জনই ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৭ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে আরও ১১ হাজার ১৬২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৮ জনে। তাদের মধ্যে মোট ১৫ হাজার ৫৯৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস। 

দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা গত ২৭ জুন থেকেই ১০০-এর ওপরে ছিল। ৪ জুলাই প্রথমবারের মতো মৃত্যুর সংখ্যা ১৫০ ছাড়ানোর খবর আসে। তিন দিনের মাথায় তা এক লাফে ২০০ ছাড়িয়ে গেল। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের সামাজিক বিস্তার ঘটায় কোভিড এখন ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম পর্যায়ে; হাসপাতালে এখন যে রোগীরা আসছেন, তাদের অর্ধেকই গ্রামের। এ অবস্থায় বেশি সংক্রমণের জেলা ও উপজেলাগুলোতে হাসপাতালে চাপ বেড়েছে।

রাজধানী শহর ঢাকার বাইরে জেলা হাসপাতালগুলোতে এখন উপচে পড়া করোনা রোগী। চিকিৎসা জন্য তারা ছুটছেন ঢাকার দিকে। অবস্থা সামাল দিতে এখনই অনেকটা দিশাহারা হয়ে পড়ছে রাজধানীর একেকটি হাসপাতাল। সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিচ্ছে আইসিইউ বেডের। সরকারি-বেসরকারি মিলে ২২টি হাসপাতালেরই প্রায় সব আইসিইউ বেড রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। কয়েকটি হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি আছে মাত্র এক-দুটি করে। নতুন রোগী নেওয়া যাচ্ছে না খালি না হওয়া পর্যন্ত। ফলে করোনা রোগী নিয়ে রাজধানীতে আগের মতোই শুরু হয়ে গেছে ছোটাছুটি।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে জেনারেল বেডও খালি নেই, বরং বুধবার অতিরিক্ত ৫০ রোগী ভর্তি ছিল। মাত্র সাত দিন আগেও ঢাকায় যেখানে ৫০ শতাংশের বেশি বেড খালি ছিল, সেগুলো দ্রুত রোগীতে ভরে উঠছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ গণামধ্যমকে জানিয়েছেন, সামনে পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে আরও পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড ইউনিট প্রস্তুত করাসহ বাড়তি এক হাজার বেডের একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপনেরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোকেও নিজ নিজ দায়িত্বে করোনা রোগীর সেবার ব্যবস্থাপনা বাড়াতে বলা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই এ কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে অবকাঠামোর চেয়ে আবারও জনবলের সংকটকেই বড় করে দেখা হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১ জুলাই ঢাকা মহানগরীর ১৬টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত এবং ২৮টি প্রাইভেট হাসপাতালে কভিড ডেডিকেটেড পাঁচ হাজার ৩১৮টি জেনারেল বেডের মধ্যে দুই হাজার ৯১২টি বা ৫৪ শতাংশ খালি এবং বাকি ৪৬ শতাংশে রোগী ছিল। আর ৮২৪টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৪০২টি বা ৪৮ শতাংশ খালি এবং বাকি ৫২ শতাংশে রোগী ছিল।

বুধবারের হিসাবে দেখা যায়, সেই চিত্র অনেকটাই উল্টে গিয়ে এখন জেনারেল বেড খালি আছে ৪১ শতাংশ আর রোগীতে ভরে গেছে ৫৯ শতাংশ। আইসিইউ খালি আছে মাত্র ২৬ শতাংশ এবং রোগী আছে ৭৪ শতাংশে। এর মধ্যে শুধু সরকারি হাসপাতালে ১ জুলাই খালি ছিল ৫২ শতাংশ জেনারেল বেড আর ৪২ শতাংশ আইসিইউ বেড। এখন সেখানে খালি আছে ৪২ শতাংশ জেনারেল বেড ও ২২ শতাংশ আইসিইউ বেড। অর্থাৎ ঢাকার সরকারি হাসপাতালের ৭৮ শতাংশ আইসিইউ বেডই রোগীতে ভরে গেছে। প্রাইভেটে ১ জুলাই আইসিইউ ও জেনারেল বেডের উভয় ক্ষেত্রে রোগী ছিল ৪০ শতাংশ করে আর ৬০ শতাংশ খালি ছিল। কিন্তু বুধবারের হিসাবে প্রাইভেটেরও ৭০ শতাংশ আইসিইউ ও ৬২ শতাংশ জেনারেল বেডে রোগী ছিল।

ডিএনসিসি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, “আমার এখানে এখন যে রোগী আছে তার ৭০ শতাংশেরই বেশি এসেছে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে। এ ছাড়া ঢাকার যেসব হাসপাতালে এখন আর রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না, সেখান থেকেও আমার এখানে রোগী পাঠানো হচ্ছে। এভাবে যদি রোগী আসতে থাকে তবে আগামী পাঁচ-সাত দিন পর আমার এখানেও আর ঠাঁই দেওয়া যাবে না। আবার এখানে শুধু জায়গা থাকলেই তো হবে না, জনবলসহ আনুষঙ্গিক আরও অনেক কিছুই দরকার হবে।”

একদিন আগেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেছেন, হাসপাতালের রোগীর অর্ধেকই আসছে গ্রাম থেকে। তথ্যানুসারে সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোনো আইসিইউ বেড খালি নেই। শুধু ডিএনসিসি হাসপাতালেই এখনও খসড়া হিসাবে বুধবার ২১২টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৭৫টি খালি ছিল। প্রাইভেটের ২৮টি হাসপাতালের মধ্যে পাঁচটিতে জেনারেল ও আইসিইউ কোনও বেডই খালি নেই। সবগুলোতে করোনা রোগী। এছাড়া আরও সাতটির কোনও আইসিইউ বেড খালি নেই।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com