দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হলে দেশে বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে ১৭তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ট্রিপলাভার ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশি পর্যটক আনতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতেই হবে।
আমরা ট্যুরিজমকে মাথায় রেখে এই প্রক্রিয়া যত সহজ করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্য, নেপাল ও ভুটানে কোনো সমুদ্র সৈকত নেই। আমরা যদি তাদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে পারি সেক্ষেত্রে আমরা অনেক পর্যটক পাবো। এবিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে দ্রুত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করব। পর্যটন খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদেরও ডাকবো সেখানে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশে ক্রুজ শিপ চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব, যাতে আমরা দ্রুত আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ক্রুজশিপ বাংলাদেশে আনতে পারি। আমরা চাই একজন বিদেশি ক্রুজশিপে এই দেশে আসবে, শিপের মধ্যেই যাতে তার ইমিগ্রেশন হয়। তারা যাতে সেখান থেকে নির্বিঘ্নে দেশের পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকাগুলো ঘুরে দেখতে পারে।
দেশের পর্যটন খাত নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে পদ্মাসেতু হয়েছে, মেট্রোরেল হচ্ছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে হচ্ছে। বিমানবন্দরের টার্মিনাল হচ্ছে, কক্সবাজারের সমুদ্র ছুয়ে রানওয়েতে নামবে প্লেন। এই অর্জনগুলো দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি। এ ছাড়াও বাংলাদেশে অনেক ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আছে, হাওর আছে। এইসব পর্যটন আকর্ষণের যেন পরিকল্পিত ও সমন্বিত উন্নয়ন হয় সেজন্য একটি ট্যুরিজম মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।
৩ দিনব্যাপী পর্যটন মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। মেলার প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ৪০ টাকা। প্রবেশ কুপনের ওপরে সমাপনী দিনে একটি র্যাফেল ড্রর আয়োজন করা হবে। বিজয়ীদের জন্য থাকবে মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, দিল্লি, কলকাতা, কক্সবাজার এবং সিলেটের জন্য রিটার্ন টিকিটসহ আকর্ষণীয় অন্যান্য পুরস্কার।
ঢাকা ট্রাভেল মার্ট ২০২২ এর টাইটেল স্পন্সর অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ট্রিপলাভার, কো-স্পন্সর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। পার্টনার হিসেবে আয়োজনে সহযোগিতা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।
মেলার আয়োজক বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম, বসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আলী কদর, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহির মো. জাবের, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক প্রশাসন জাহিদ হোসেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বক্তব্য দেন।
২ জুন সকাল থেকে শুরু হওয়া ৩ দিনব্যাপী এ মেলা শেষ হবে ৪ জুন। এবারের মেলায় প্রায় ৫০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে জাতীয় পর্যটন সংস্থা এয়ারলাইন, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাও রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এএম