ইউরোপের ফুটবল মিডিয়া কয়েকদিন ধরে এমনিতেই গরম রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদের আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে। সেই ঝামেলা না মিটতেই এবার মাদ্রিদ ডার্বিতে বিতর্কিত এক পেনাল্টিতে গোল হজম করতে হলো কার্লো আনচেলোত্তির দলকে। ম্যাচ শেষে এই ইতালিয়ান ম্যানেজার তো বলেই ফেললেন, “ফুটবলের মানুষরা এমন পেনাল্টি বোঝে না”।
ম্যাচে শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটা গোল শোধ করে রিয়াল। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যকার লা লিগার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। লিগের পয়েন্ট টেবিলের অবস্থার কারণে লাভটা হলো এই ম্যাচে দর্শকের ভূমিকায় থাকা বার্সেলোনার।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এদিন খেলা শুরুর আগে মাঠে প্রবেশ করেন সদ্যই পেশাদার ফুটবলের বুটজোড়া তুলে রাখা মার্সেলো। রিয়ালের হয়ে ৫৪৬ ম্যাচ খেলে ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ৬টি লা লিগার শিরোপা জিতেছেন এই লেফটব্যাক। ৩৬ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়াকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়, তার হাতে ক্লাবের বিশেষ একটি জার্সি তুলে দেন লস ব্ল্যাঙ্কসদের আরেক গ্রেট লুকা মদ্রিচ।
দুই দলই শুরুর দিকে ঢিমেতালে খেলতে থাকে। ম্যাচের ৩১ মিনিটে বক্সের ভেতর অরলিয়ে চুয়ামেনি পা গিয়ে পড়ে অ্যাতলেটিকোর স্যামুয়েল লিনোর পায়ে, যদিও তার আগেই বল বেরিয়ে যায় দুজনের মাঝ দিয়ে। অনেকক্ষণ সময় নিয়ে ভিএআর চেক করে পেনাল্টির সিধান্ত দেন রেফারি। তখন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে থাকা রিয়াল বস কার্লো দুহাত দিয়ে মুখ ঢাকেন অবিশ্বাসে। এমনকি ধারাভাষ্যকারদেরও দাবি এটা কোনোভাবেই পেনাল্টি নয়।
হুলিয়ান আলভারেসের সোজাসুজি স্পট কিকে এগিয়ে যায় অতিথি দলটি। বিরতির পর পরই সমতায় ফেরে রিয়াল। ডান প্রান্ত দিয়ে দুইজন ফুটবলারকে কাটিয়ে দারুণ ক্রস করেন রদ্রিগো। বক্সের ভেতর থেকে জুড বেলিংহ্যাম প্রথমে শট নিয়েছিলেন, সেটা ফিরে এলে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে। এরপরই অ্যাতলেটিকো বস দিয়াগো সিমিওনি তার ট্রেডমার্ক ‘বাস পার্কিং’ ডিফেন্সিভ মুডে চলে গেলে গোল পায়নি কোন দলই।
তবে এই ড্রয়ের পরও লা লিগার টেবিলে ২৩ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রইল রিয়াল। সমান ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো। অন্যদিকে মাদ্রিদ ডার্বি ড্রয়ের ফলে সবচেয়ে লাভবান বার্সা এক ম্যাচ কম খেলে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে।
গত সপ্তাহে রিয়াল যখন এস্পানিওলের বিপক্ষে পরাজয়ের পর রেফারির ব্যাপারে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছিল, তখন অ্যাতলেটিকো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তাদের অভিযোগ ছিল যে- রিয়াল রেফারিদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তাই মাদ্রিদ ডার্বি শেষে যখন বিতর্কিত পেনাল্টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ক্ষুদ্ধ আনচেলোত্তি প্রথমে বলেছিলেন, “আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিব না।”
“আমরা মনে করি আমরা আরও কিছু পাওয়ার ছিল। ম্যাচটি আমরা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম, আমরা গোল করেছি, বক্সে প্রবেশ করেছি, আমরা দ্বিতীয়ার্ধে খুব ভালো খেলেছি।”- যোগ করেন আনচেলত্তি।
অন্যদিকে বিতর্কিত পেনাল্টির কল্যাণে জয়ী অ্যাতলেটিকো বস সিমিওনি রেফারির পক্ষ নিবেন সেটাই স্বাভাবিক, “আমি মনে করি রেফারি তার সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।”
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ