সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সেতু বিভাগের সচিব হলেন ফাহিমুল ইসলাম ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ প্রথম মাসের বেতন ত্রাণ তহবিলে দিলেন আসিফ মাহমুদ ধামরাইয়ে ৯ দাবিতে আকিজ ফুড শ্রমিকদের বিক্ষোভ নারায়ণগঞ্জে বাজারে আগুন, ৩০ দোকান পুড়ে ছাই পদ্মার চরে পানি, হতাশ চাষিরা এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান গ্রেফতার সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা আজ থেকে শুরু হচ্ছে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিলের ‘হেক্সা’ দিল্লির সুপারশপে দেখা মিললো সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুলের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ৭৩৫ জনের খসড়া তালিকা প্রকাশ শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : রাষ্ট্রপতি শিশুর বিকাশের অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে সমাধানে বদ্ধপরিকর সরকার ৭ অক্টোবর বিশ্ব বসতি দিবসে সরকারের নানা কর্মসূচি গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও প্রায় অর্ধশত ফিলিস্তিনি প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট, ওএসডি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব ভারতে পালানোর সময় সাবেক ভূমিমন্ত্রী আটক শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে হলিউড তারকার টুইট

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক
  • আপলোড সময় শনিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২২
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

হলিউড তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রাণ বৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা রাখার জন্য একটি টুইট করে বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও টুইটারে লিখেছেন, ”সেন্টমার্টিন’স দ্বীপের চারপাশে নতুন প্রতিষ্ঠিত সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং এনজিওগুলোকে অভিনন্দন যা সেখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে নিরাপদ আবাস নিশ্চিত করবে।

টুইটের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের একটি ছবিও শেয়ার করেছেন।

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে নয় কিলোমিটার দক্ষিণে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত দ্বীপটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি নারকেল জিঞ্জিরা হিসেবে পরিচিত। প্রচুর নারকেল পাওয়া যায় বলে এ নামটি অনেক আগে থেকেই পরিচিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকার জন্য লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও পরিচিত রয়েছে। কিন্তু কেন তিনি বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন সুরক্ষায় এই অভিনন্দন বার্তা জানালেন?

সেন্ট মার্টিনের সৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো।

মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) কী?

যখন সমুদ্রের কোন বিশেষ এলাকাকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) বা সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়, তখন সেখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

বাংলাদেশের সরকার গত চৌঠা জানুয়ারি সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ আশেপাশের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) ঘোষণা করেছে। এর আগে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডকে এমপিএ ঘোষণা করা হয়েছিল।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং মেরিন বায়োলজিস্ট ড. কাজী আহসান হাবীব বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”এই ঘোষণার ফলে ওই এলাকাটি সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকা হিসাবে বিশেষ মর্যাদা পেলো, যেটা আমরা পরিবেশবাদীরা অনেকদিন ধরে দাবি করে আসছিলাম। এখন সরকারকে এই এলাকা রক্ষায় আলাদাভাবে নিয়মকানুন তৈরি করে কার্যকর করতে হবে।”

সিঙ্গাপুরের সিস্টার’স আইল্যান্ড, ফিলিপিন্সের অ্যাপো আইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ার নর্থ সুলাওয়েসি মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়ার অন্যতম উদাহরণ।

সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।

মেরিন প্রোটেক্টেড এলাকা কেন ঘোষণা করা হয়?

প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যখন কোন এলাকাকে মেরিন প্রোটেক্টেড এলাকা ঘোষণা করা হয়, তার মানে হলো এমন একটি সুরক্ষিত ব্যবস্থাপনা ওই এলাকায় চালু করা, যা সেখানকার প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করবে। অর্থনৈতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা বা বিশেষ কোন প্রজাতির সুরক্ষা- অনেকগুলো কারণে কোন এলাকাকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করা হতে পারে।

এজন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে এমন কৌশল তৈরি করতে হবে, যার ফলে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও তদারকির মাধ্যমে সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেন্টমার্টিন কেন মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া?

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুজিনা বেগম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, তিনি ছোটবেলায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি যেভাবে দেখেছেন, এখন তার চেয়ে অনেক বদলে গেছে।

”আগে সারা বছর দ্বীপে মাছ পাওয়া যেতো। এখন তো শীতকালে মাছই পাওয়া যায় না। দ্বীপে মানুষ যারা আসে, তাদের জন্য বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসতে হয়” তিনি বলছেন।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মাত্রাতিরিক্ত পর্যটক যাতায়াত করার কারণে সেখানকার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিষয়ে বিভিন্ন সময় সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।

তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল এই দ্বীপে মাত্রাতিরিক্ত পর্যটকের যাতায়াত, বড় আকারের জাহাজের চলাচল এবং যত্রতত্র বর্জ্য ফেলে পরিবেশ নষ্ট করার মতো গুরুতর অভিযোগ।

সেন্ট মার্টিন বর্তমানে শতাধিক আবাসিক রিসোর্ট বা হোটেল রয়েছে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন আট থেকে ১০ হাজার পর্যটক দ্বীপটিতে ভ্রমণ করেন।

সৌন্দর্যের জন্য সেন্ট মার্টিনের খ্যাতি রয়েছে

বাংলাদেশের সমুদ্র বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবাদীরা অনেকদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন যেন সেন্ট মার্টিনকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করা হয়। তাদের দাবি, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে যতো জীববৈচিত্র্য রয়েছে, তা খুবই বিরল।

অধ্যাপক কাজী এহসান হাবীব বলছেন, ”এখানকার মাছ, উদ্ভিদ বা প্রাণীকে রক্ষা করতে হলে কোরাল রিফগুলোকে রক্ষা করতে হবে। আশেপাশে যত মাছের উৎপাদন হয়, সেগুলোর ২৫ শতাংশ হয় কোরাল রিফের ওপর নির্ভর করে। যেহেতু এটা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, এটা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ড. হাবীব বলছেন, ”মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণার ফলে এখন থেকে সেন্ট মার্টিনে কতজন পর্যটক আসবেন বা থাকবেন, জাহাজ কতটা চলাচল করবে, এই এলাকায় কতটা বা কীভাবে মাছ ধরা হবে, বর্জ্য এবং রাসায়নিক পদার্থের ডাম্পিং, প্রবাল সংগ্রহ ইত্যাদি সবক্ষেত্রে সরকারকে আলাদাভাবে বিধিবিধান জারি করে কার্যকর করতে হবে। সংরক্ষিত এলাকার যেন কোনরকম ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড না হয়, সেটা নিশ্চিত করাই হবে প্রধান উদ্দেশ্য।”

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের সরকার সেন্ট মার্টিন এলাকাকে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া বা পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা-ইসিএ হিসাবে ঘোষণা করেছিল। যদিও সেই ঘোষণা সেন্ট মার্টিন রক্ষায় খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণার পরেও যেন সেরকম না ঘটে, সেজন্য তাগিদ দিচ্ছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।

প্রতিদিন এই দ্বীপে আট থেকে ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুজিনা বেগম অবশ্য বলছেন, সেন্ট মার্টিন পরিবেশ রক্ষায় তারা কাজ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকের যত্রতত্র বর্জ্য না ফেলার জন্য তারা সচেতন করছেন। কিন্তু সেন্ট মার্টিন নিয়ে যে গবেষকরা কাজ করেন, তাদের বক্তব্য, দ্বীপটির প্রতিবেশ রক্ষায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

অধ্যাপক কাজী এহসান হাবীব বলছেন, ”ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করার পরেও কিন্তু সেন্ট মার্টিনের প্রতিবেশ, পরিবেশ সেভাবে রক্ষা করা যায়নি। সবাই আশা করছে, এই ঘোষণার পর এই রক্ষা করার বিষয়টি আরও জোরদার হবে। তবে কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই- এমনটা যেন না হয়। প্রবাল দ্বীপটিকে প্রকৃতভাবে রক্ষা করতে, সেইরকম বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।”

সেন্ট মার্টিনকে মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর। সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এমপিএ নীতিমালা কী হবে, কীভাবে সেটা বাস্তবায়ন করা হবে, সেসব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে তারা আলোচনা করে একটি গাইডলাইন তৈরির জন্য তারা কাজ করছেন।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: বিবিসি অনলাইন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com