বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক ধরা পড়ল শিক্ষার্থীদের হাতে সিরিয়ায় আসাদপন্থিদের ‘অতর্কিত হামলায়’ ১৪ নিরাপত্তা সদস্য নিহত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আট-নয় তলার নথিপত্র সব পুড়ে গেছে বলে ধারণা ফায়ার ডিজির পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন

বাংলাদেশে চালের দাম হঠাৎ এত বাড়লো কেন?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০১৭
  • ১৭৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য মোটা চালের দাম এখন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। এক কেজি চাল কিনতে হচ্ছে ৪৮ টাকায়।

শুধু মোটা চাল নয় সব ধরনের চালের দামই বিগত বছরের চেয়ে অনেক বেড়ে যাওয়ায় কষ্টের মধ্যে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষসহ স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো।

বাজারে চালের এই দাম বৃদ্ধিকে বলা হচ্ছে অস্বাভাবিক।

বাবু বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, “গত বছর যে চাইল ২৬/২৭ টাকা বেঁচছি সেই চাইল এ বছর ৪৬/৪৭ টাকা। মোডা চাইলডা গত বছর বেচ্ছি আপনের ২২/২৩ টাকা এবছর ৪২/৪৩ টাকা কেজি পাইকারি।”

প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতা থেকে মি. ইসলাম বলেন বছরের এ সময়ে চালের দাম এতটা বৃদ্ধি অযৌক্তিক। চালের দাম এ বছরের মতো এতটা চড়া আগে কখনো হয়নি।
চালের দাম দাম বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, “বর্তমানে যে সরকারি পর্যায়ে চালের মজুদ এটা অনেক কমে গেছে। একই সাথে সাম্প্রতিক যে বোরো সময়টাতে ফসলের উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একটা ব্যহত হয়েছে।”

“আমরা দেখেছি হাওরে একটা বড় ক্ষতি হয়েছে আর ব্লাস্টের কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সার্বিকভাবে এটা ১০ থেকে ১১ শতাংশের একটা ক্ষতির আশঙ্কা আছে। সেই ক্ষতির প্রেক্ষিতে এখন বাজারে যেটা আছে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা।”

গবেষকরা দেখছেন ১০ টাকায় চাল বিক্রিসহ সরকারি নানা খাদ্য কর্মসূচী নিলেও পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করা হয়নি। সরকারি চালের মজুদ গত বছর এ সময় ছিল প্রায় ছয় লক্ষ টন, এবার সেটি দুই লাখ টনেরও নিচে।

আর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ থাকায় চাল ব্যবসায়ীরাও বেশি পরিমাণে চাল আমদানি করছেন না।

বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি কাওসার আলম খান বলেন, “এক কেজি চাল ইমপোর্ট করলে আমার ট্যাক্স আসে কেজিতে নয় টাকা। আমি যদি এক হাজার টন ইমপোর্ট করি তাইলে আমারতো ৯০ লাখ টাকা শুল্ক দিতে হয়!”
“যদি কালকে সরকার ঘোষণা দেয় যে আমি শুল্ক উঠাইয়া দেব তাইলেতো আমার ৯০ লাখ টাকা বঙ্গোপসাগরে চইল্যা গেল। তাইলে আমি কেন করবো?”
দীর্ঘ চাল ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে কাওসার আলম খান বলছেন নতুন চাল বাজারে ওঠার পর এত দাম বাড়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে দেশে বড় বড় মিল মালিকদেরও ভূমিকা আছে মনে করেন মি. খান।
তার কথায়, “আজকে থেকে দশ পনের বছর আগে তো ছোট ছোট চালের মিল ছিল। তারা এত হিসাবও করতে পারতো না। সে মার্কেটে কম দামে হলেও বিক্রি করতো। এখনতো সেই মিল আর নাই।”
“আগামীতে আমি যেটা দেখতেছি আরো বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি বড় বড় কোম্পানি আসতেছে। পুরা চাইলটা তাদের হাতে চলে যাইতেছে। তখন তো আরো এমনই থাকবে।”
চালের দাম এতটা বৃদ্ধির পেছনে প্রাকৃতিক কারণকেই দায়ী করছেন চালকল মালিকরা।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, “বৃষ্টি, বর্ষা, ঝড় আবার হাওরের ধান কিছু নষ্ট হইছে। আবার আমাদের মিলেও কিছুটা চাল নষ্ট হইছে।”
“আরেকটা কারণ, আমাদের এবার রেশিওটা কম। মানে একমন ধান থেকে আমরা ২৪/২৫ সের চাল পাই কিন্তু এবার আমরা ২০/২২ সেরের বেশি পাচ্ছি না।”
তবে বড় মিলাররা ধান চাল মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে এমন অভিযোগও আসছে।
চালকল মালিক মি. বাবু বলেন, “কিছুটা স্টক রাখতে হয় এজন্য যে রানিং ধান কিনে চাল বিক্রি করতে গেলে লস হবে, অনেক লস হবে। আমার মনে হয় এক মাসের ওপর গোটা বাংলাদেশে স্টক রাখা যায় না। এজন্য মিলারদের দোষারোপ করার কিছু নাই।”
এবছর বোরো ফলন শেষে সরকারের ৭ লাখ টন ধান ও ৮ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৬শ টনের মতো চাল সংগ্রহ হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে অসাধু ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা চাল মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চালের বাজার স্বাভাবিক করতে এখন খাদ্য মন্ত্রণালয় বিদেশ থেকে চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
ঢাকার বাবুবাজার আড়তে চালের বস্তা টেনে জীবিকা চালান রাসেল মিয়া। রাসেল বাজারের সবচেয়ে কমদামি মোটা চাল কিনে খান যার দাম এখন কেজি প্রতি ৪৮ টাকা – যা সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রাসেল বলছিলেন, “আমাদের মনে করেন প্রতিদিনের তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি চাউল লাগে। বর্তমানে আমরা রুজি করি ধরেন তিন থেকে চাইরশ ট্যাকা। চাউলেই যদি আমাদের ধরেন দুইশ টাকা যায় গা তাইলে বাজারের ট্যাকা থাকে কইথ্থিকা?”
চাল বাজারের দিনমজুর রাসেলের মতো সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষেরা এখন সংকটে পড়েছেন চালের দাম নিয়ে। সংকটে পড়েছেন নিম্ন মধ্যবিত্তরাও। সূত্র : আবুল কালাম আজাদ, বিবিসি বাংলা

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com