শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সিলেটে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, একজনের মৃত্যু নিজেদের ট্যাংক থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার এআই ভিডিওর ফাঁদে ভারতের রাজনীতি কোরবানির চাহিদার চেয়ে ২২,৭৭,৯৭৩ অতিরিক্ত গবাদিপশু প্রস্তুত কক্সবাজারের আদলে সাজবে পতেঙ্গা ছিনতাই হতে যাওয়া ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করলেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ‌‘হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ কেস খেলবা আসো, নিপুণকে ডিপজল পর্যটন খাতে তুরস্ককে বিনিয়োগের আহ্বান মন্ত্রীর গাজায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্পের অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে পাপুলের শ্যালিকা ও দুই কর কর্মকর্তার বিরু‌দ্ধে দুদকের মামলা ‘কাক পোশাকে’ কানের লাল গালিচায় ভাবনা ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ আটক ৩ বুদ্ধ পূর্ণিমা ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ লাবনীসহ গ্রেপ্তার ৭ ‘ডো‌নাল্ড লু ঘুরে যাওয়ায় বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে’ রূপপুর-মেট্রোরেলসহ ১০ প্রকল্পেই বরাদ্দ ৫২ হাজার কোটি

বাংলাদেশ থেকে বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

♦এক দশকে পাচারের পরিমাণ ৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা

♦চলতি বছরের মোট বাজেটের চেয়েও বেশি টাকা ১০ বছরে পাচার হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫৯০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে ২০১৫ সালে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০০৬ থেকে এক দশকে পাচারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। আমদানি-রপ্তানির সময়ে পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করার মাধ্যমেই এই অর্থের বড় অংশ পাচার করা হয়েছে।ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) এর বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বিশ্বজুড়ে অর্থপাচার নিয়ে প্রায় এক দশক ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে জিএফআই। প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে ১৪৮ উন্নয়নশীল দেশের টাকা পাচারের চিত্র। ২০১৫ সালে মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তুলনায় পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫ ভাগ।

জিএফআই’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৫৯০ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের প্রায় ২০ ভাগই পাচার হয়েছে নানা কৌশলে। জিএফআই’র হিসাবে, ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে  ৬ হাজার ৩০৯ কোটি ডলার বা ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাংলাদেশের মোট বাজেট ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের মোট বাজেটের চেয়েও বেশি টাকা ১০ বছরে পাচার হয়েছে।

মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কত শতাংশ পর্যন্ত অর্থ পাচার হয়েছে, সেই তথ্য প্রকাশ করেছে জিএফআই। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দুটি হিসাবই রয়েছে। পাশাপাশি অবৈধভাবে কী পরিমাণ অর্থ দেশের ভেতরে এসেছে, সেই তথ্যও প্রতিবেদনে দেয়া রয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের দেয়া অর্থ পাচারের সব হিসাবই রক্ষণশীল, অর্থ পাচারের প্রকৃত পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৪ সালে দেশ থেকে পাচার হয় ৮৯৭ কোটি ডলার। অঙ্কের হিসাবে ২০১৫ সালে এর পরিমাণ কমলেও জিএফআই বলছে, এটি আনুমানিক হিসাব। প্রকৃত পাচারের পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে। পাচারের পাশাপাশি ২০১৫ সালে অবৈধভাবে দেশে এসেছে ২৮০ কোটি ডলার।

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে, টাকার অঙ্কের দিক দিয়ে ২০১৫ সালে অর্থপাচারে শীর্ষ ৩০ দেশের একটি ছিল বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এশিয়ার ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ফিলিপাইন। দেশটি থেকে পাচার হয়েছে ৫১০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের আগে রয়েছে ভারত। দেশটি থেকে ৯৮০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এর আগে আছে মালয়েশিয়া। দেশটি থেকে পাচার হয়েছে ৩৩.৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনে অবৈধভাবে দেশের বাইরে অর্থ পাচারের শীর্ষ তালিকায় রয়েছে সাউথ আফ্রিকা। দেশটি থেকে পাচার হয়েছে ১০.২ বিলিয়ন ডলার। এর পর রয়েছে নাইজেরিয়া (৮.৩ বিলিয়ন), তুরস্ক (৮.৪ বিলিয়ন), হাঙ্গেরি (৬.৫ বিলিয়ন), পোলান্ড (৩.১), মেক্সিকো (৪২.৯ বিলিয়ন), ব্রাজিল (১২.২ বিলিয়ন), কলম্বিয়া (৭.৪ বিলিয়ন), চিলি (৪.১ বিলিয়ন)।

মূল প্রতিবেদনে ১৪৮টি দেশের অবৈধ অর্থ প্রবাহের তথ্য দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়, তার ২৪ শতাংশই হয় উন্নয়নশীল দেশ থেকে। আর প্রতিবছরই অর্থ পাচারের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। মূলত আর্থিক খাতে স্বচ্ছতার অভাবেই অর্থ পাচার বাড়ছে। জিএফআই বলছে, টাকা পাচারের এ প্রবণতা টেকসই উন্নয়নের বড় বাধা।

জিএফআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ২০১২ সালে অর্থ পাচারের পরিমাণ ৭২২ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার ও ২০১৪ সালে ৭০০ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০০৫ সালে ৪২৬ কোটি ২০ লাখ ডলার, ২০০৬ সালে ৩৩৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ২০০৭ সালে ৪০৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ২০০৮ সালে ৬৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২০০৯ সালে ৬১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি ৯০ লাখ ডলার এবং ২০১১ সালে পাচার হয় ৫৯২ কোটি ১০ লাখ ডলার।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক তদন্তে দেখা গেছে, শিল্পের যন্ত্রপাতি ভর্তি কনটেইনারে পাওয়া গেছে ছাই, ইট, বালি, পাথর ও সিমেন্টের বক। এতে শিল্পের কোনো যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া বন্দরে শুল্ক গোয়েন্দাদের তদন্তে খালি কনটেইনার আমদানির ঘটনাও ধরা পড়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, যখন আস্থার সংকটে ভোগেন তখনেই মূলধন বিদেশে নিয়ে যান অনৈতিক পন্থায়। দেশ থেকে টাকা পাচার বেড়ে যাওয়াও এটি একটি কারণ বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কমে যাওয়ার অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে অর্থ পাচার। এ ছাড়া দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেও অর্থ পাচার বাড়ছে। তার মতে, অর্থ পাচার রোধ করতে হলে দুর্নীতি কমিয়ে আনার বিকল্প নেই। পাশাপাশি বিনিয়োগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। নাগরিক জীবনেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, টাকা পাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় কাজ করছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে যেসব আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন রয়েছে, আমরা তা পুরোপুরি মেনে চলছি। আন্তর্জাতিকভাবে যেসব তথ্য আসছে, তা সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরবরাহ করছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি নেই।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: মানবজমিন/এসএইচ

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com