বাংলা৭১নিউজ, কিশোরগঞ্জ: উজান থেকে নেমে আসা পানি ও পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়নের বড় বাঁধ ভেঙে প্রায় ৮০০ একর জমির পাকা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এতে এলাকার কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ভোরে হঠাৎ সিংপুর বড় বাঁধ ভেঙে গিয়ে হাওরের জমির পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক দিনমজুরকে ৭০০ টাকা দিয়েও জমিতে পানি থাকায় ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সিংপুর ইউনিয়নের বড় বাঁধ ঘুরে দেখা যায়, বাঁধ ভেঙে হাওরের জমির ধান প্রায় এক ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। ওই জায়গায় যে বোরো ধানের জমি ছিল, প্রথমে দেখলে বোঝা যাবে না। সিংপুর গ্রামের আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘সারা বছর পরিশ্রম করে পাঁচ একর জমিতে ব্রি ২৯ জাতের ধানের চাষ করেছি। আর দুই দিন পরেই ধান কেটে বাড়িতে আনার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু এখন চোখের সামনে সব পাকা ধানের জমি তলিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকদের দিয়ে ডুবে থাকা পাকা ধান কাটার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু ডুব দিয়ে এ ধান কাটা সম্ভব না।’ একই কথা কলেন কৃষক আবদুল হেকিম, আনোয়ার ইসলাম, আরস আলী, আনিস মিয়া, শামসু উদ্দিন, সাহের উদ্দিন ও সুনামউদ্দিন মাস্টার। সিংপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই বাঁধের আওতায় সিংপুর হাওরে প্রায় ১ হাজার ৭০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। টানা কয়েক দিনে প্রায় ৯০০ একর জমির ধান কাটা হয়েছে। ৮০০ একরের ধান বড় বাঁধটি ভেঙে তলিয়ে গেছে। জমিতে এখনো প্রায় এক ফুট পানি আছে। সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ ঘোড়উত্রা নদীর পানি বাড়ায় বাঁধটি ভেঙে গেছে। নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে গতকাল সিংপুর বড় বাঁধের ভাঙনটি দেখে এসেছি। এ মুহূর্তে কিছু করার নেই। কৃষকেরা পানিতে নেমে কিছু পাকা ও আধা পাকা ধান কাটছে। তবে ওই বাঁধ আগামী বোরো মৌসুমের আগেই মাটি ফেলে উঁচু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হবে।’ বাংলা৭১নিউজ/এএফ