বাংলা৭১নিউজ,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: চলতি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৯৯ জন ছাত্রী অনুপস্থিত রয়েছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন,এদের বেশিরভাগই বাল্যবিবাহের শিকার। তাদের সহপাঠিরা মনের আনন্দে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করলেও বাল্যবিবাহের কারনে ওইসব কোমলমতি শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ছিটকে পড়েছে।
আফিনা, মৌসুমী, হাসনা মুছুল্লীপাড়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, শাহিনা, শাহনাজ পারভীন ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আতিকা খাতুন দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রুজিনা, সেলিনা, মোকছিদা খাতুন বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থী। ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহবাজার এ এইচ ফাজিল মাদ্রসা পরীক্ষা কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করার কথা। কিন্তু প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠানের টেবিলে পরে থাকলেও পরীক্ষার্থীর খোঁজ রাখেনি কেউ। পরীক্ষা কক্ষের বেঞ্চে তাদের রোল বসানো থাকলেও এদের অধিকাংশই রয়েছে স্বামীর সংসারে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় বাল্যবিবাহের প্রবনতা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সরকারী ও বেসরকারীভাবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও থামছে না তার রাহুগ্রাস। গত ৬ মাসে শুধুমাত্র বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও দাসিয়ারছড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩ জন শিশু শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলার কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামের জাবেদ আলী, কুরুষা ফেরুষা গ্রামের খলিলুর রহমান, পুর্ব-ফুলমতি গ্রামের মোকলেছ আলী জানান, তাদের মেয়ে জেএসসি পরীক্ষার্থী। জামাই ভালো পেয়েছেন,তাই বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
ফুলবাড়ী জছিমিঞা সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব আবেদ আলী খন্দকার জানান, তার কেন্দ্রে ৪৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে নাই। হয়তোবা তারা স্বামীর সংসার করছে।
শিমুলবাড়ী মিয়াপাড়া নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব জামাল উদ্দিন বিএসসি বলেন, এবারের জেএসসি পরীক্ষায় আমার কেন্দ্রে ২১ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। শুনেছি এদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম জানান, চলতি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় উপজেলার ৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। এদের মধ্যে ৯৯ জন বালিকা এবং ৪১ জন বালক।
ইউএনও মোছাঃ মাছুমা আরেফিন জানান, অভিভাবকদের সচেতনতা না থাকায় বাল্য বিবাহ হয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ জোরদার করতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এমই