ফরিদপুরের সদরপুরে কৃষ্টপুর ইউনিয়নের হাটকৃষ্ণপুর বাজার দখলকে কেন্দ্র করে কৃষ্টপুর ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জালাল ফকির (৪০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আরেকজনের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
নিহত জালাল ফকির উপজেলার নিজ গ্রামের শুকুর ফকিরের ছেলে। তিনি কৃষ্টপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাসের সমর্থক।
বুধ (১৬ নভেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার যাত্রাবাড়ী এালাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অন্তর্ভুক্ত হাটকৃষ্ণপুর বাজারের দখল নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন ফকিরের গ্রুপের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাসের গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই জেরে বুধবার বিকেলে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে হাটকৃষ্ণপুর বাজারে ও উপজেলার যাত্রাবাড়ী এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
বুধবার দুপুরে সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থক গিয়াসউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেলে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এতে আহত হন কমপক্ষে ১৫ জন।
পরে বৃহস্পতিবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজন আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় জালাল ফকির নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় আহত হন অন্তত ১০ জন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে জালাল ফকির মারা যান।
এ বিষয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকির বলেন, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাসের সমর্থকরা কুপিয়ে গিয়াসউদ্দিন তালুকদারের কবজি কেটে দেন। তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস অভিযোগ করে বলেন, বিরোধীপক্ষের লোকজন আমার সমর্থকদের ওপর হামলা ও বেশ কিছু বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই হাটকৃষ্ণপুর বাজার থেকে যে চাঁদা তোলা হতো তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় চাঁদা তুলতে বাধা দিলেই সংঘর্ষ বাধাচ্ছে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় আমার এক সমর্থক নিহত হয়েছেন।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন, সংঘর্ষে জালাল নামের একজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ