ফরিদপুরের নগরকান্দায় দুই গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার সলিথা ও মিরাকান্দা গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে শলিথা গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর সকালে দুইপক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে সলিথা গ্রামের আয়োজনে ওয়াজ মাহফিল হয়। মাহফিলে দোকানপট্টিতে কয়েক তরুণের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় মীরাকান্দা গ্রামের নাঈম মাতুব্বর (১৭) নামে এক তরুণের মাথা ফেটে যায়। এঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে দুই গ্রামবাসী। এরই জেরে শনিবার সকালে ঢাল-সরকি, কাতরা, রামদা, ইট-পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।
সলিথা গ্রামের বাসিন্দা ও গ্রাম্য মাতুব্বর আকতার হাদি জানান, শুক্রবার রাতে ওয়াজে দোকানপট্টিতে মীরাকান্দা গ্রামের কয়েক যুবক মেয়েদের বিরক্ত করার জেরে একজনকে মারধর করে বলে শুনেছিলাম। এর জেরে সকালে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-সরকি, কাতরা, রামদা নিয়ে সলিথা বাজারে অতর্কিতভাবে হামলা করে মীরাকান্দাবাসী। এসময় মোস্তফা মাতুব্বর নামে একজনকে কুপিয়ে আহত এবং আমারসহ ৫-৬টি দোকানপাট ভাংচুর করে। পরে আমরা জোটবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করি। এতে গ্রামের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
মীরাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. জিয়াউর রহমান জানান, সলিথা গ্রামের ওয়াজে আমাদের গ্রামের নাঈমকে পূর্ব শত্রুতাবশত ডেকে নিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে শনিবার সকালে গ্রামের সব মানুষ একত্র হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরপরই দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলী বলেন, পূর্ব শত্রুতার বিরোধে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার সময় আমার হাত কেটে যায়। এছাড়া পুলিশের আরও ৪ জন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শাকিল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ