বাংলা৭১নিউজ, কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি: কুমিল্লা উত্তর জেলার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীন কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। হামলা-মামলা, খুন, আধিপত্য বিস্তার, অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ণের জালে পড়ে জেলা আ’লীগের সেক্রেটারী জাহাঙ্গীর আলম সরকারের হাতে গড়া দীর্ঘদিনের সাজানো আওয়ামী বাগান তছনছ হয়ে পড়েছে। ফলে দলটির তৃণমূলে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে সংগঠনিক কাঠামো। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। এই বিপর্যয় থেকে কাটিয়ে উঠতে দলের ত্যাগি ও পোড়খাওয়া নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে দলের এহেন পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় এমপিকে (স্বতন্ত্র) দায়ী করে ত্যাগি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতন ও মামলার ফিরিস্তি তুলে ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন আউয়াল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ওই লিখিত অভিযোগে স্থানীয় এমপির ছত্রছায়ায় থেকে দলের অভ্যন্তরে ঢুকে হাইব্রিডের একটি সিন্ডিকেট গ্রুপ দলকে আজকের এই বিপর্যয় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। লিখিত অভিযোগে ৬১টি মামলার নাম্বারসহ আসামীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামীগন সবাই জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যয়ের মূলদল ও অঙ্গ দলের শীর্ষ পদ-পদবিতে রয়েছে। এদিকে, ওই সিন্ডিকেট গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী ইউসুফ আবদুল্লা হারুন এমপি আর মূলদলের নেতৃত্বে আছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার। ওই লিখিত অভিযোগের বিবরনে জানা যায়, মুরাদনগরে একটি মার্কেটের নামকরণ ’বঙ্গবন্ধ মার্কেট’ নাম স্থগিত করে ’গোমতী মার্কেট’ নামকরন করা হয়েছে। বর্তমানে মুরাদনগরে বঙ্গবন্ধুর নামে কোন স্থাপনা নেই।
সরকারী অনুদান ও উন্নয়নের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এমপির ছত্রছায়ায় থ্কাা হাইব্রিড সিন্ডিকেটের দু’গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে সাইদুল ও ফারুক নামে দুই যুবক মারা গেছে। এছাড়াও উন্নয়নের টাকা ভাগ-ভাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে ওই দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং বহু দোকান-পাট ভাংচুর করা হয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৪মে ঢাকা প্রেস ক্লাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ত্যাগি নেতাকর্মীদের উপর হামলা, আত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ও মামলার করুন ইতিহাস তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহাম্মদ হোসেন ইনকিলাবকে বলেছেন, গত সাড়ে তিন বছরে স্থানীয় এমপির (স্বতন্ত্র) অনুসারীরা দলের বারোটা বাজিয়েছে। আমরা দলের মূল ¯্রােত জেলা সেক্রেটারীর নেতুত্বে সংগঠনকে ধরে রেখেছি, রাখার চেষ্টা করছি। কোন অপশক্তিই বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের দমিয়ে রাখতে পারবেনা ইনশাল্লাহ। দুইজন সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম ও আবুল কালাম আজাদ বলেন, দলের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে হাইব্রিড নিয়ে স্থানীয় এমপি (স্বতন্ত্র) কোন আওয়ামী লীগ করেন? তিনি দলে যে বিপর্যয় ডেকে এনেছেন জেলা সেক্রেটারীর নেতৃত্বে তা আমরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। তবে এই দুই ত্যাগি নেতা এ বিষয়ে দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস