বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সুপ্রিমকোর্টের আদেশ ছাড়া কারাগারে কীভাবে আদালত বসল, সেই বিষয়টি তদন্ত করতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে একটি লিখিত আবেদনও জমা দিয়েছেন তারা।
রবিবার দুপুরে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন আইনজীবীরা। পরে তার কক্ষে তারা এক ঘণ্টা বৈঠকও করেন।
এ সময় সাবেক স্পিকার জমির উদ্দীন সরকার, সুপ্রিম কোট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, মীর নাসির উদ্দীন, বদরুদ্দোজা বাদল, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়া কারাগারে আদালত বসানো যায় না। এ বিষয়টি অবহিত করে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। বিষয়টি দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।’
বৈঠকের আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসেবা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়। রিটটি দায়েরের পরপরই প্রধান বিচারপতির কাছে যান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড হওয়ার পর খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে চলা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আর হাজিরা দেননি অসুস্থতার কথা বলে। ফলে এতদিনে যে মামলার রায় হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক ছিল, সেটি আটকে আছে।
এই অবস্থায় গত ৫ সেপ্টেম্বর নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই বসে আদালত। আর কারাগারে আদালত বসাকে সংবিধান বহির্ভুত বলে দাবি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পাশাপাশি তারা সেদিনের শুনানি বর্জন করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে এর আগের রাতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দেয়া আবেদনে বলা হয়, ‘পরিত্যক্ত কারাগারে কোনও বিচার কাজ চলতে পারে না। যদি চলে- তা হবে অবৈধ। দেশের কারাগারের তালিকা থেকে পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি এখনও বাদ দেওয়া হয়নি- সে কারণে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়া পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থাপন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত।’
প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে আরও বলা হয়, ‘আমরা আপনার কাছে অনুরোধ করছি, যারা বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে এবং যে বিচারিক কর্মকর্তা তার বিচাররিক সীমা লঙ্ঘন করেছে- তাদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট বাংলদেশ (হাইকোর্ট বিভাগ) ১৯৭৩ বিধি অনুযায়ী তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা ভালো নয় দাবি করে আবেদনে উল্লেখ আছে, ‘তিনি গুরুতর অসুস্থ, হাঁটতে পারেন না। যা সরকারও স্বীকার করেছে। তবুও সরকার তার যথাযথ চিকিৎসার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা না করে এ ধরনের কোনও প্রজ্ঞাপন সরকার জারি করতে পারে না। তাই এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।’
‘প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে প্রধান বিচারপতি ধৈর্য সহকারে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তিনি (প্রধান বিচারপতি) তার ক্ষমতাবলে এ বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’ সূত্র: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস