বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নয়, প্রধান বিচারপতি নিজেই সুপ্রিম কোর্টের মূল প্রাঙ্গন থেকে ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘বরকতউল্লাহ বুলু মুক্তি পরিষদ’ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির কারাবন্দি ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ হয়।

মওদুদ বলেন, এই যে ভাস্কর্য, মৃনাল হকের ভাস্কর্য। তিনি বলেছেন- এটা কোনো দেবীর ভাস্কর্য নয়, বাংলাদেশে একজন শাড়ি পরা নারীর ভাস্কর্য। সেটার ওপর কত রকমের কথাবার্তা হয়েছে, কত রকমের বির্তক তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সবার এমন একটা ভাব যেন এই জিনিসটা, এই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তারা উদ্যোগী হবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের জানাতে চাই- আমাদের প্রধান বিচারপতি এই ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নিজে নিয়েছেন। তিনি সরকারের নির্দেশে এটা করেননি।’

ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত নেন বলে দাবি করেন সাবেক এই আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বৃহস্পতিবার দেড়টার সময়ে প্রধান বিচারপতি সভা ডেকেছিলেন। সেখানে ড. কামাল হোসেন, আমীরুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, বার অ্যাসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি ছিলেন।

মওদুদ বলেন, ‘আমাদের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এখন বললো, সমস্ত সিনিয়র আইনজীবী- খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী ছিলেন, সবার সঙ্গে তিনি (প্রধান বিচারপতি) পরামর্শ করেছিলেন। কী করা যায়?’

‘তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন, আপনি এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিলে ভালো হয়। এ নিয়ে কোনো বির্তক থাকুক, প্রধান বিচারপতিকে বির্তকিত করা হোক- এটা আমরা কেউ চাই না’ যোগ করেন তিনি।

সরকার বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণের পাঁয়তারা করছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং করেছে। বর্তমান সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই যতগুলো সংশোধনী এনেছে বিশেষ করে ১৫তম ও ১৬তম সংশোধনী, ইনশাল্লাহ বিএনপি যদি ক্ষমতায় যায়, এসব সংশোধনী পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেবে।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন একটি অগ্রহণযোগ্য একটি কমিশন। এটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নয়, সরকারের তল্পিবাহক একটি কমিশন।

মওদুদ আহমদ বলেন, এই রোডম্যাপ নামে তারা কীভাবে একদলীয়ভাবে একটা আগামীতে নির্বাচন করা যায়, সেটার রূপরেখা দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে আর একদলীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এজন্য বিএনপিসহ সব গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন করবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।’

এসময় নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা বিএনপির পক্ষ থেকে শিগগিরই দেয়া হবে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

সংগঠনের সভাপতি আকবর হোসেন ভুঁইয়া নান্টুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন ,বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু, বিএনপি নেতা কাজী আবুল বাশার ও মোরতাজুল করীম বাদরু প্রমুখ।

বাংলা৭১নিউজ/এসএসএইচ