গত এক বছরে দেশে পাঁচ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ছয় হাজার ২৮৪ জন। সেই হিসাবে গড়ে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারান ১৭ জন। গত এক বছরে ঘটা এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন সাত হাজার ৪৬৮ জন এবং শারীরিকভাবে অক্ষম হয়েছেন ১২ হাজার ৫০০ জন।
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ, সেবক ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার আয়োজিত ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপে’ সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে গবেষক কাজী আবুল আল আতাহিয়া এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে আমরা যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি। যার প্রমাণ করোনা মোকাবেলা। কিন্তু আমরা সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কাজ করছি না। এটির দিকে নজর দেওয়া দরকার। এ জন্য চালকদের নিরাপদ গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাদের সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, দুর্ঘটনাগুলো আমাদের হাতের তৈরি। তাই এটাকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটা ক্র্যাশ। চালক প্রশিক্ষিত ও দক্ষ না হলে দুর্ঘটনা আরো বাড়বে। চালকদের দক্ষ বানাতে হবে। যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে সে ম্যানেজ করতে পারে। তাই নিরাপদ চালক তৈরি করা দেশে খুব জরুরি।
বিআরটিএর দায়িত্ব চালকদের আগে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তার পরে লাইসেন্স দেওয়া। গাড়ির ফিটনেস প্রক্রিয়া ও চালককে লাইসেন্স প্রদানে বিআরটিএকে আরো সচেতন হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু চালককেই দোষারোপ করা হয়। কিন্তু এর পেছনে আরো কারণ থাকে। শুধু চালককে জেলে দেওয়া সমীচীন নয়। তাই সিস্টেমকে নিরাপদ করার জন্য সিস্টেমের পরিবর্তন দরকার। ফিটনেস সেন্টারগুলোতে সিসিটিভি দিলে বড় পরিবর্তন আসবে। কোনো বড় প্রজেক্ট নিতে হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে খান মোহাম্মদ বাবুল বলেন, ডোপ টেস্টের নামে চালকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার নামে অর্থ নেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন নেশাখোর চালকের জন্য কেন সব চালককে এমন হয়রান হতে হবে? রাস্তায় এলইডি লাইটের কারণে চালকরা গাড়ি চালাতে পারেন না। সরকারকে বলব এটি আমদানি বন্ধ করুন, তাহলে রাস্তায় দুর্ঘটনা কমবে।
সংলাপে সেবকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান মোহাম্মদ বাবুলের সভাপতিত্বে সমন্বয়ক পার্থ সারথি দাসের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক নুরুন্নবী শিমুল, রোড সেফটি অ্যালায়েন্সের প্রতিনিধি আবদুল ওয়াহেদ, মোটর ড্রাইভিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল বাশার, শাহীন হোসেন মোল্লা, সোনিয়া শিব্রা প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম