পুঁজিবাজারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থানে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
ব্যাংক, বীমা ও বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরতপন হলেও একদিন পরেই চিত্র বদলে গেছে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে প্রথম ৩৫ মিনিটের লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩৪ পয়েন্ট পড়ে যায়।
এর পরই বদলাতে থাকে চিত্র। দাম বাড়ার তালিকায় উঠে আসে একের পর এক ব্যাংক, বীমা ও বস্ত্র খাতের কোম্পানি। এই তিন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৫০টি বীমার মধ্যে ৪৭টিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে মাত্র ২টির। আর একটির লেনদেন হয়নি। অথচ একদিন আগেই এ খাতের মাত্র ২টি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় এবং ৪৭টির স্থান হয় পতনের তালিকায়।
বীমার মতো ব্যাংক খাতেও একদিনের ব্যবধানে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইতে ব্যাংক খাতের ২৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে মাত্র একটির। আর দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অথচ একদিন আগেই এ খাতের মাত্র ১টি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে ২৩টির।
অপরদিকে বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৩৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২টির। ব্যাংক ও বীমার মতো বুধবার এই খাতেরও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরতপন হয়। বুধবার দরপতনের তালিকায় স্থান করে নেয় বস্ত্র খাতের ৪২টি কোম্পানি। বিপরীতে দাম বাড়ে ১১টির।
শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক, বীমা ও বস্ত্র খাতের এই দাপটের মধ্যে সব খাত মিলে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫২টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচকের বড় উত্থান হলেও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ৩০ কোটি ৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনেদেন বেড়েছে ৪৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ১০৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কুইন সাউথ টেক্সটাইল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- কাট্টালী টেক্সটাইল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ম্যাকসন স্পিনিং, এস্কয়ার নিট কম্পোজিট, সাইফ পাওয়ারটেক এবং আইএফআইসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম