বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আট-নয় তলার নথিপত্র সব পুড়ে গেছে বলে ধারণা ফায়ার ডিজির পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে

পিনাক-৬ লঞ্চ ট্রাজেডির ৩ বছর : অজ্ঞাত ২১ জনের পরিচয় আজও মেলেনি, পরিবারগুলো পায়নি আর্থিক সহায়তা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭
  • ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর প্রতিনিধি : রিজিয়া বেগম শিবচরের বন্দরখোলার বৃদ্ধা এই মায়ের দরিদ্র সংসারে ৫ সন্তানের মাঝে ৪ র্থ সন্তান মিজানুর ছিল পরিবারের অন্যতম উপার্জনক্ষম। ২০১৪ সালে ঈদে বাড়ি এসে ঢাকায় ফেরার পথে ২ সন্তান ও স্ত্রীসহ নিহত হয় মিজানুর। মিজানুরসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার হলেও এখনো মেয়ে নিখোজ রয়েছে । এই শোকে মিজানের বাবাও কিছুদিন পর মারা যায়। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গী ছেলে ও পরিবারের সদস্যদের ছবি হাতে শুধু কান্না। লঞ্চটিতে উঠার আগে বিশ্ব কাপানো স্বর্না হিরাসহ ৩ বোনের সেলফিই এখন পরিবারের একমাত্র সম্বল। পাশের ইউনিয়ন সন্নাসীরচরের ফরহাদের পরিনতি আরো ভয়াবহ। ফরহাদসহ পরিবারের ৪ জনের কারোরই লাশ পাওয়া যায়নি। আর এ অজুহাতে নিখোজ অর্ধ শতাধিক পরিবারের কাউকেই দেয়া হয়নি ঘোষিত আর্থীক অনুদান। আর অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হলেও ডিএনএ নমুনাই রয়ে গেছে মেলেনি পরিচয়। আজও সন্ধান মেলেনি লঞ্চটিরও। ৪৯ জনের মধ্যে অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হওয়ায় অনুদান পান মাত্র ২৮ জনের পরিবার। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে নিহত ও নিখোজ পরিবারগুলোর অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন কাটাচ্ছেন।
একাধিক সুত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝাই আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরের কাওরাকান্দি ঘাট থেকে পিনাক-৬ লঞ্চটি উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে মাওয়ার অংশে ডুবে যায়। সরকারি ভাবে ওই ঘটনায় ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ২৮টি লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয় আর ২১ জনকে শিবচর পৌরকবর স্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়। নিখোঁজ থাকে আরো ৫৩ জন। তবে বেসরকারী হিসেবে অন্তত শতাধিক যাত্রী নিখোজ রয়েছে। স্বজনদের না পেয়ে এসব পরিবারে চলছে এখনো শোকের ছায়া। নিহতদের মধ্যে অনেকেই স্বপরিবারে ও নিখোজদের অনেকেই স্বপরিবারে রয়েছে। এই যেমন, শিবচর পৌর এলাকার মোঃ নুরুল হক মিয়ার শিকদার মেডিকেলে ডাক্তারী পড়–য়া মেয়ে নুসরাত জাহান হিরা ও রাজধানীর বীরশ্রেষ্ট নুর মোহাম্মদ কলেজের ছাত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা স্বর্ণা এবং তারই ভায়রার মেয়ে চীনের জইনুস মেডিকেল কলেজের ছাত্রী শরিয়তপুরে গঙ্গানগর এলাকার জান্নাতুল নাঈম লাখী এই দুর্ঘটনায় ৩ জন মারা গেলেও উদ্ধার হয়েছে ২জনের মৃতদেহ।
Madaripur News-04.08.20

একজন এখনো নিঁখোজ। যে সকল পরিবারে এখনো স্বজনরা নিঁখোজ রয়েছেন তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোন সরকারী সাহায্য। এরপর আর কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে অনেক অসহায় পরিবারকে কাটাতে হচ্ছে মানবেতর জীবন যাপন। কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। এতে ক্ষোভের অন্ত নেই স্বজন হারা পরিবারগুলোতে। যদিও নিহতদের তাৎক্ষনিকভাবে ২০ হাজার করে টাকা ও পরিবর্তিতে ঘোষিত ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। ঘটনার পর লৌহজং ও শিবচরে স্থাপন করা হয় অভিযোগ ও তথ্য কেন্দ্র। নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। লৌহজং থানায় বিভিন্ন সংস্থা থেকে মামলা হয় ৪ টি।
নিহত মিজানুরের বৃদ্ধা মা রিজিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলের সংসারে ৪জন মারা গেছে ওই লঞ্চে। ৩ জনের লাশ পাইছি। নাতনির লাশ আজও পাই নাই। এই ছেলেই ছিল আমার সংসারের আলো। ওর শোকে শোকে ওর বাপও কয়দিন পরই মারা গেছে । আমি এহন জ্যান্ত লাশ। স্বপরিবারে নিখোজ ফরহাদের ছোট ভাই শিশু মিয়া বলেন, ৪ টা লাশের মধ্যে একটা লাশ পাইলেও মনডারে সান্তনা দিতে পারতাম। আর সরকার টাকাতো দুরে থাক একটা খবরো নেয় নাই।
শিবচর পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, অজ্ঞাত ২১ জনের লাশ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ লাশগুলোর ডিএনএ নমুনা সংরক্ষন করা হয়েছে। তবে গত তিন বছরেও কেউ লাশের পরিচয়ের সন্ধানে আসেন নি। যদি কেউ আসে তবে পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ বলেন, পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পরে সরকারের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে নিখোজ ব্যাক্তিদের যেহেতু কোন প্রমান নেই তাই নিখোজ হিসেবে আবেদনকারী কোন পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com