বাংলা৭১নিউজ,(রংপুর)প্রতিনিধি: সাবেক রাষ্ট্রপতি, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জানাজার জন্য প্রস্তুত রংপুর কালেক্টরেট মাঠ। মঙ্গলবার বাদ জোহর এ মাঠেই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রিয় নেতাকে শেষ দেখা দেখতে সকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনতা ঈদগাহ মাঠে আসতে শুরু করেছেন। দুপুর ১২টার দিকে মুসল্লিদের ভিড়ে মাঠ অনেকটাই ভরে যায়।
দলীয় নেতারা আশা করছেন কমপক্ষে ৫ লাখ মানুষ পল্লীবন্ধুর জানাজায় অংশ নেবেন। এরশাদের জানাজা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জানাজা।
এদিকে রংপুরের পল্লী নিবাসে এরশাদকে দাফন করার সিদ্ধান্তে এখনও অটল রয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েকশ নেতা রংপুরে ইতিমধ্যে রংপুরে এসে পৌঁছেছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ জানাজায় শরিক হবেন।
এদিকে এরশাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুর জেলা দোকান মালিক সমিতি নগরীর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট দুপুর ২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সকাল থেকে নগরীর সব দোকান বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বিমানবাহিনীর একটি সাদা হেলিকপ্টারযোগে এরশাদের লাশ ঢাকা থেকে আনা হয় রংপুর ক্যান্টনমেন্টে।
ক্যান্টনমেন্ট থেকে চতুর্থ জানাজার জন্য লাশ আনা হয় কালেক্টরেট মাঠে। এখানেই বাদ জোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন এরশাদের জানাজায় ইমামতি করবেন রংপুর করিমিয়া নুরুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ ইদ্রিস আলী।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর থেকে এরশাদের মরদেহবাহী হেলিকপ্টার রংপুরের উদ্দেশে রওনা হয়।
এরশাদের কফিনের সঙ্গে যান তার ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, আজম খান, এটিইউ তাজ রহমান ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
রংপুর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বলছেন এরশাদের অন্তিম চাওয়া ছিল তাকে রংপুরেই দাফন করা হোক। সে জন্য পল্লী নিবাসের লিচুতলায় কবর খনন করা হয়েছে। রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, জানাজা শেষে স্যারের (এরশাদ) মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পল্লী নিবাসে। সেখানে লিচুতলায় তাকে দাফন করা হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
রংপুরের মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ঘোষণা দিয়েছেন, তারা ‘যেকোনো মূল্যে’ এরশাদের মরদেহ রংপুরে রেখে দেবেন। এরশাদকে রংপুরেই দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত রোববার সকাল পৌনে ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদে দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রংপুরে চতুর্থ জানাজা শেষে আজ তাকে দাফন করা হবে। এরশাদের ভাই জিএম কাদের জানিয়েছেন, রংপুরে নয়, এরশাদের দাফন হবে ঢাকাতেই।
বাংলা৭১নিউজ/এমএম