গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ক্যাম্পাস ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ৯ দফা দাবিতে টানা ১৭ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, মিছিল ও র্যালি করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অনিয়ম, দুর্নীতি, গাফলতি, যৌন হয়রানি এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করে কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তার বহিষ্কারও দাবি জানাচ্ছেন। এ অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) থেকে একটি প্রতিনিধি দল আসছে ক্যাম্পাসে।
আন্দোলনের সূত্রপাত ২৩ নভেম্বর পিকনিকে যাওয়ার পথে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিন শিক্ষার্থী নিহতের পর থেকে। ওইদিন মেকানিক্যাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (এমপিই) বিভাগের শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। হতাহতের ঘটনায় বিভাগীয় প্রধানের মন্তব্যে বিক্ষুব্ধ হন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাইমুম ইবনে সায়েদ বলেন, শোকসন্তপ্ত ছাত্রদের কাঁধে দোষ চাপানোর লক্ষ্যে বিভাগীয় প্রধান চেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার জন্য একটি চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভুল তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ওআইসি প্রতিনিধি দলের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী মো. তাইমুম ইবনে সায়েদ বলেন, দাবি পূরণ ও ন্যায়বিচার এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মিলহান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চলুক’ (আইউটি ফ্যাকাল্টি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি) নামে একটি অ-অনুমোদিত শিক্ষক ফোরাম রয়েছে। ওই ফোরামের মাধ্যমে কয়েকজন শিক্ষক ক্যাম্পাসে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
তিনি জানান, এরই মধ্যে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস কাউন্সিল (আইএসসি)। তারা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আস্থা ও সততা পুনরুদ্ধারে জবাবদিহিতা এবং সংস্কারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইইউটির উপাচার্য ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি নিজে ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আচার্য, ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেলকে অবহিত করেছেন।
উপাচার্য আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করে ওআইসি একটি বার্তা প্রেরণ করে। আইইউটিতে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায়। প্রতিনিধিরা সরাসরি শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবে। একই সঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকতে এবং পুনরায় একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ