রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইসলামী ব্যাংকের সচেতনতা বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত ‘দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায় কানাডা কুমিল্লায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকির নির্দেশনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসেবার আওতাধীন খাতে ইউজার ফি আদায়ে নীতিমালার সুপারিশ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজলভ্য উৎস খোঁজার তাগিদ প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত সুইজারল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন স্পিকার জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: আইজিপি টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ইশরাক ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে কালশী ট্রাফিক বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশাচালকরা কমলাপুর আইসিডি’র নিয়ন্ত্রণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নিতে সুপারিশ ভোট কম পড়ার বড় ফ্যাক্টর বিএনপি : ইসি আলমগীর অভিবাসী কর্মীদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার

পটুয়াখালী-৪: আ.লীগ দুর্গ রক্ষায় মরিয়া, হানা দিতে চায় বিএনপি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮
  • ৭৫৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, এম.নাজিম উদ্দিন,পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী) নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন। এটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এ আসনের আওতাধীন রয়েছে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশন।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার খায়েশ রয়েছে অনেকেরই। ফলে এরইমধ্যে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় তৎপর। এ আসনে কলাপাড়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন এবং ২টি পৌরসভায় ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৩৪জন ও রাঙ্গাবালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ভোটার ৭৪ হাজার ৮১৭জন।
প্রথম দিকে আসনটি জাতীয় পার্টির দখলে ছিল। কিন্তু ৯০-পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির কাছ থেকে আসনটি হাতছাড়া হয়ে আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। অনেকেই বলে এ আসনের মানুষ ‘নৌকা’র কান্ডারি। একারণে আসনটি টিকিয়ে রাখতে তৎপর আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। পোষ্টার, ব্যানার, লিফলেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে নিজের অবস্থানকে জানান দিচ্ছেন। আবার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। অংশগ্রহণ বাড়ছে দলীয় কর্মসূচিতে। মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত কাজ করছেন অনেকে। আবার যারা গত কয়েক বছরে নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। তারাও নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় অতিথি পাখির মত আসা যাওয়া করছেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান এমপি মাহবুবুর রহমান। তিনি এই আসনে তিনবার এমপি হন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম বার মাহবুবুর রহমান এমপি নির্বাচিত হলে তাকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। এরইমধ্যে এই এমপি পুরোদমে সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। তবে মাহবুবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নির্বাচনী এলাকায় ভাবমূর্তি কিছুটা সংকটে পড়ে। এমপি মাহবুবের অনুসারীদের দাবি, আওয়ামী লীগের ঘাঁটি টিকিয়ে রাখতে হলে এই আসনে মাহবুবুর রহমানের বিকল্প নেই। দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন পটুয়াখালী-৪ আসনের সাবেক এমপি মরহুম আনোয়ার-উল-ইসলামের ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ইসলাম লিটন।
মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারেন ক্লিন ইমেজের সাবেক এমপি আনোয়ারের ছেলে লিটন, এমন গুঞ্জন জোড়েশোড়ে বইছে। তিনি নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ শুরু করে দিয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম লিটন বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা কোন দুর্নীতিবাজকে মনোনয়ন দেবে না। মনোনয়নের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আনোয়ার-উল-ইসলাম এই আসনে একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছেন। আমি এই জনপদে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। আশা করছি, দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। আমি যদি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি হলে আমার বাবার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করব।’
এই দুইজন ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিব্বুর রহমান মহিব। মহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, ‘অতীতে আমি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে সমগ্র দেশে নেতৃত্ব দিয়েছি। এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
এসব কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্শীবাদ ও সুদৃষ্টি পাব বলে আমার বিশ্বাস। এছাড়া মনোনয়ন চাইতে পারেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ড.আরিফ বিন ইসলাম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) হাবিবুর রহমান মিলন, কলাপাড়া উপজেলা আ.লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাসির উদ্দিন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদুল আলম টিটো ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সোহাগ।
কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবং কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি এবিএম মোশারেফ হোসেন। তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে মোশারেফ কলাপাড়া এবং রাঙ্গাবালীর রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ করত। এখনও রয়েছে তার অধিপত্য। তাছাড়া টিভি ‘টকশো’ ব্যক্তিত্ব এই নেতা মনোনয়ন পেতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে এবিএম মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আমি বিএনপির প্রার্থী ছিলাম।
নির্বাচনের পর থেকেই গণমানুষের সাথে আছি। দলের সকল আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, দল আমার এ শ্রমকে মূল্যায়ন করবে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করতে দল হয়তো আমরা কথাই বেশি বিবেচনা করবে।’ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিএনপির যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ বাঁধা সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে রাঙ্গাবালীতে আমাদের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১০-১৫টি মামলা চলমান আছে। কোন নেতাকর্মী যদি কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে শারীরিকসহ বিভিন্নভাবে তাকে হয়রানি করা হয়। এসব কারণে গণসংযোগ অব্যাহত রাখলেও কৌশলগত কারণে জনগণের সামনে আমরা যাই না। আমাদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে।’
মোশারেফ ছাড়াও মাঠে রয়েছেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ও কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো: মনিরুজ্জামান মনির। তার বাবা বিএনপির সাবেক এমপি মরহুম মোয়াজ্জেম হোসেন। মনিরের বাবার ক্লিন ইমেজের কারণে তিনি মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারেন বলে ধারণা করছে অনেকেই। এছাড়া মনোনয়ন চাইছেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: মোস্তাফিজুর রহমান। মনোনয়ন প্রত্যাশী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমি আশাবাদি। আমাকে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের দুর্গ ভাঙা সম্ভব, যেটা অন্য কাউকে দিয়ে সম্ভব নয়। তাছাড়া ২০০৮’র নির্বাচনে মোশারেফকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেড়ে যান। দলের দুর্দিনে মোশারেফ কেন্দ্র ঘোষিত কোন কর্মসূচি পালন করেনি। সে সবকিছুতেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসন গঠনের পর ১৯৮৬ সালের ৭ মে তৃতীয় এবং প্রধান বিরোধী দলবিহীন বিতর্কিত ১৯৮৮ সালের ৩ মে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মরহুম আব্দুর রাজ্জাক খান এমপি হন। তিনি জাতীয় পার্টির আমলে পরপর দুইবার এমপি ছিলেন।
প্রথম নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনোয়ার-উল-ইসলাম নির্বাচিত হন। তখন থেকেই জাতীয় পার্টির কাছ থেকে আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায়। কেবল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিরোধী দলবিহীন বিতর্কিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে খালি মাঠে গোল দেওয়ার মত বিএনপির মোস্তাফিজুর রহমান নির্বাচিত হন। বিতর্কিত ওই নির্বাচনের চার মাস পর অর্থাৎ ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মত আওয়ামী লীগের আনোয়ার-উল-ইসলাম নির্বাচিত হয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করেন।
এরপর ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মাহবুবুর রহমান জয়লাভ করেন। তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মত মাহবুবুর রহমান এমপি নির্বাচিত হলে তাকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাহবুবুর রহমান তৃতীয় বার এমপি হন। এ আসন গঠনের পর থেকে বেশিরভাগ নির্বাচনে জিতেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com