বাংলা৭১নিউজ, পঞ্চগড়: হিমালয় থেকে বয়ে আসা ২৫টি নদ-নদী পঞ্চগড়ের বুক চিরে প্রবাহিত হয়েছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং মাটিতে পাথর বালির আধিক্য থাকায় অর্থকরী ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারালেও বিকল্প ফসল উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের চাষিরা।
পরিবেশ উপযোগী, ঝুঁকি কম এবং উৎপাদন খরচ সীমিত পক্ষান্তরে অধিক মুনাফা নিশ্চিত হয়ে পঞ্চগড়ের চাষিরা ঝুঁকে পড়েছে উচ্চ ফলনশীল বাদাম চাষে। নদীর চর পরিত্যক্ত বিরান ভূমি এখন আর পড়ে নেই। প্রযুক্তিগত ধারণা, ঋণ সুবিধাসহ উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাত ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে পারলে এ জেলার উৎপাদিত বাদাম গ্রামীণ এই জনপদের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বছরের দুই মৌসুমে ব্যাপক আকারে চাষ হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল বাদাম। বিশেষ করে জেলার দেবীগঞ্জ এবং বোদা উপজেলায় এই বাদাম চাষ বর্তমানে কৃষিতে নতুন এক বিপ্লব এনে দিয়েছে। বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘাতেই ১২ মন বাদাম উৎপাদন সম্ভব। সাইজে আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে প্রতি মন বাদামের পাইকারি মূল্য ২ হাজার টাকার উপরে। স্বল্প খরচে অধিক মুনাফায় এই বাদাম চাষ চাষিদের স্বাবলম্বী করে তুলেছে। পঞ্চগড়ের বাদাম চাষ এখন এ অঞ্চলের প্রধান ফসল হিসেবে পরিচিত।
তবে সুষ্ঠু বাজারজাত, আর্থিক সহায়তা এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কিছুটা হতাশ চাষিরা। ব্যাপক পরিসরে এই বাদাম চাষের ফলে প্রতি বছর উৎপাদনও বেড়েছে। কৃষকের উৎপাদিত বাদাম জেলার বেশ কিছু হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ধুমছে। আর এই বাজার চলবে টানা ৬ মাস।
গুনগতমান এবং ব্যাপক চাহিদা থাকায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্রেতারা বাদাম খরিদ করছে কৃষক এবং আড়ৎদারদের কাছ থেকে। উৎপাদিত ফসলের সন্তোষজনক দাম, এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে চাষিদের সহায়তা করা গেলে পঞ্চগড়ের উৎপাদিত বাদাম এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে এমনটি জানালেন কৃষি বিভাগ।
উৎপাদনমুখী এই প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এলাকার আর্থিক-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে পাশাপাশি সচ্ছলতাও ফিরেছে প্রান্তিক চাষিদের মাঝে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস