বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় ১২৮তম বাংলাদেশ পানিতে ডুবে দুই সন্তানের মৃত্যু, শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা ঘর পাচ্ছে আরও ২০ হাজার ভূমিহীন পরিবার বাংলাদেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণেরও বেশি বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়টি আবার সচল করা হবে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের দুই বছরের কারাদণ্ড নিষেধাজ্ঞায় তাদের অপকর্ম থামেনি: ফখরুল ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা চট্টগ্রামে নির্বাচনে সংঘর্ষ, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন উপজেলা নির্বাচন : স্ট্রোক করে মারা গেছেন ১ ভোটার ও ১ আনসার ‘ভাইদের কোনো লাইসেন্স ছিল প্রমাণ দিতে পারলে শাস্তি মেনে নেব’ ভূতের গলিতে নির্মাণাধীন ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু পুলিশি বাধায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে যেতে পারেনি গণসংহতির মিছিল ‘আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই’ ভিসানী‌তির অধীনে সাবেক সেনাপ্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র কুড়িগ্রামে জাল ভোট দিতে গিয়ে আটক ১, ১৫ দিনের সাজা রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে মার্কিন ভূমিকার অভিযোগ অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের গোটা বাংলাদেশ কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে আছে : রিজভী শরীয়তপুরে চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ১০ সাংবাদিক আহত

নিখোঁজ বোনের খোঁজে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে দু’বোন, ভিটেবাড়ি হারানোর শংকা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০১৮
  • ১৯৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: ২০১৪ সালের ১২ জুলাই। ঈদ-উল-ফিতরের পরদিন নাটোরের উত্তরা গণভবন দেখতে প্রতিবেশী আব্দুল খলিল ও রাজার সাথে সিংড়া থেকে নাটোর আসেন রিনা খাতুন ও তার ৮ বছরের ছেলে হৃদয়। দিনশেষে তারা আর বাড়ি ফিরে যায়নি।  প্রতিবেশীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, ছেলে হৃদয়কে সাথে নিয়ে রিনা গেছে পাবনায় তার বোনের বাড়ি। রিনার পরিবার প্রতিবেশীর কথায় বিশ্বাস করে আর খোঁজ নেয়নি তাদের।

এদিকে দুদিন পেড়িয়ে গেলেও  রিনা ও হৃদয় যোগাযোগ না করায় সন্দেহ হয় তার বোন রহিমা বিবির। এবার ওই প্রতিবেশীর কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, তার মেয়ে ও নাতিকে অনৈতিক কাজের জন্য বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সেই থেকে সন্তানসহ নিখোঁজ বোন রিনার সন্ধানে আদালত পাড়া সহ দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরছে দু’বোন রুবিয়া ও রহিমা। তাদের সন্ধানে ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে জাল দলিল করে তাদের এক চিলতে জমিও হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে প্রতিবেশী খলিল ও তার পরিবার। এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে ৪ বছর আগে ছোট বোন ও ভাগ্নের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বলছিলেন রিনার বড়বোন রুবিয়া খাতুন। ঘটনার পর নিখোঁজ দুইজনের সন্ধান চাইলে এক পর্যায়ে ওই প্রতিবেশী তাদের খুঁজে এনে দেয়ার অঙ্গীকার করে। তবে দিন যতই যেতে থাকে ততই টালবাহানা করতে থাকে প্রতিবেশী। এদিকে নিখোঁজ পরিবারটির পক্ষ থেকে চাপ দেয়া হলে এক পর্যায়ে রাগন্বিত হয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা করে প্রতিবেশী আব্দুল খলিল ও তার পরিবার।

এ ঘটনায় সিংড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল খলিল, তার দুই ছেলে রাজা ও বাদশা এবং স্ত্রী জয়তনের বিরুদ্ধে মামলা করে নিখোঁজ রিনার বোন রহিমা বিবি। মামলায় বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা রিনা ও হৃদয়কে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করাচ্ছে বা দেশের বাইরে পাচার করেছে বা হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলেছে। এই মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ চার বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়েও পুলিশ নিখোজদের সন্ধান করতে পারেনি।

এদিকে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত বছরের নভেম্বর মাসে আব্দুল খলিল গ্রেপ্তার হলে তার সন্তানরা ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার বাদী রহিমা বিবির বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা তার আরেক মেয়ে রুবিয়া বেগমকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে খলিলের স্ত্রী জয়নব। এসময় বাড়িতে থাকা নগদ ৩৭ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং পুনরায় থানায় অভিযোগ করলে হত্যা করা হবে, মর্মে হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর মামলার বাদীসহ তার পরিবার সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত হতে থাকে প্রতিনিয়ত। চলতে থাকে সমঝোতার নামে স্থানীয় সালিশ বৈঠক।

এদিকে বাদী ও বিবাদীকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন সিংড়া পৌরমেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস। এক পর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল সিংড়া পৌরসভার মাধ্যমে স্থায়ী আপোষের ব্যবস্থা করেন মেয়র। নিখোঁজের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে আব্দুল খলিলের ২ শতাংশ জমি বাদী রহিমার পরিবারকে দেয়া হবে মর্মে আপোষনামা প্রস্তত করেন। আপোষনামায় উভয় পক্ষই স্বাক্ষর করে এবং সম্মত হন যে, তারা পরস্পরের দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার করবেন এবং নিখোঁজ দুজন ফিরে এলে কেউ কারো বিরুদ্ধে মামলা ও দাবী করতে পারবে না।

এই আপোষনামার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও ভুক্তভোগী পরিবারটি পায়নি প্রতিশ্রুত জমি। উপরন্তু বাদীর পরিবারের ওপর বারবার চড়াও হয় খলিলের পরিবার। নিখোঁজ রিনার বোন রহিমা বিবি ও রুবিয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের সাথে বারবার প্রতারণা করা হচ্ছে। প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখছে না খলিলের পরিবার। আমরা না পেলাম বোন-ভাগ্নে, না পেলাম ক্ষতিপূরণ। চাইতে গেলেই তেড়ে মারতে আসে। আমারা নিখোঁজ বোন ও তার ছেলের সন্ধান চাই, ক্ষতিপূরণ চাইনা।’ অভিযুক্ত খলিলের স্ত্রী জয়তন বিবি বলেন, আমাদের পরিবারের কেউ তাদের দুজনের নিখোঁজের সাথে জড়িত নয়। যেহেতু তারা মামলা করেছে তাই ঝামেলা এড়াতে আমরা একটা আপোষনামায় স্বাক্ষর করেছিলাম। তবে দুই শতাংশ নয়, দেড় শতাংশ জমি দেবো। এর বেশী দিতে পারবো না। ‘

এ ব্যাপারে সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘ ভিকটিম উদ্ধারসহ বিষয়টি মিমাংসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। উভয়পক্ষের সম্মতিতে শালিশ করা হয়। তারা উভয়েই স্বেচ্ছায় আপোষনামায়স্বাক্ষর করেন। এখন অভিযুক্ত পক্ষ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জমি দিতে চাচ্ছে না এবং বাদী পক্ষও তাদের পরিবারের নিখোঁজ সদস্যদের সন্ধান চাইছে। বিষয়টি জটিল হচ্ছে দিনদিন। এভাবে চলতে থাকলে স্থানীয় মধ্যস্থতা বন্ধ করে আইন অনুযায়ী লড়াই করতে হবে দুপক্ষকেই।

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সালিশে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াটি ব্যর্থ হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নিখোঁজ দুজনের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া যাবে না। ভিকটিম উদ্ধার না হওয়ায় মামলাটি নিস্পত্তি করা সম্ভব নয়। ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে এবং তথ্য নিয়ে নিখোঁজদের সন্ধান করা হচ্ছে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com