বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: নামাজ এমন একটি ফরজ ইবাদত, যা দিনে পাঁচবার মুসলমানদের পরস্পরে একত্রিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। নামাজ যেমন পরস্পরের মাঝে সৌহার্দ সৃষ্টি করে একে অন্যের কাছাকাছি নিয়ে আনে।
আবার নামাজ মানুষের সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে থাকে। নামাজে ধনী-গরিবের মাঝে কোনো ব্যবধান থাকে না। নামাজের বিশেষ শিক্ষা হলো একতা, শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ববোধ।
জামাআতে নামাজ পড়ার জন্য কাতার সোজা করার গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামের আগের যুগের উম্মতদের ইবাদতের কাতার ছিল গোলাকার; আর উম্মতে মুহাম্মাদির নামাজের কাতার হলো লম্বালম্বি।
ইসলাম বিচ্ছৃঙ্খলা ও অনিয়মতান্ত্রিকতা পছন্দ করে না। নামাজের কাতার সোজা করার মধ্যেই এর বাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে। হাদিসে এসেছে, ‘কাতার সোজা করা নামাজেরই সৌন্দর্য।’
নামাজের কাতার সোজা করা সুন্নাত, ওয়াজিব, মোস্তাহাব ইত্যাদি মতামত রয়েছে। তবে জামাআতের সারিকে সোজা করা ইমামের ওপর ওয়াজিব; এটা দুররে মুখতার কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এটা পরিত্যাগ করা মাকরূহে তাহরিমি।
নামাজের সারি বা কাতার সোজা করা প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-
>> হজরত নোমান ইবনে বশির রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সারিসমূহ (কাতার) এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তার সাথে তিনি তীর সোজা করছেন।
তিনি এরূপ করতেন যতক্ষণ না তিনি বুঝতে পারতেন যে আমরা বিষয়টি তার নিকট থেকে পুরোপুরি বুঝতে পেরেছি।
একবার তিনি ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন এবং নামাজে দাঁড়ালেন, এমনকি তাকবিরে তাহরিমা বলতে উদ্যত হলেন, এমন সময় দেখলেন এক ব্যক্তি সারি থেকে সামনেরে দিকে সিনা বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর বান্দাগণ! হয় তোমরা তোমাদের সারি (কাতার) সোজা করে দাঁড়াবে; নতুবা আল্লাহ তাআলা তোমাদের মুখমণ্ডলসমূহে পার্থক্য সৃষ্টি করে দেবেন। (মুসলিম, মিশকাত)
>> হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা নামাজের (কাতার) সারিসমূহকে সোজা কর। কেননা (কাতার) সারি সোজা করা নামাজ প্রতিষ্ঠা করার অন্তর্ভূক্ত।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘সফ (কাতার) বা সারি সোজা করা নামাজ পূর্ণ করার অন্তর্ভূক্ত।
পরিশেষে…
নামাজ বিশুদ্ধ ও সুন্দর হওয়ার জন্য যে সব বিধি-বিধান রয়েছে সে সবের মধ্যে নামাজের কাতার সোজা করাও তার অন্তর্ভূক্ত যেভাবে আল্লাহর বাণী- ‘নামাজ প্রতিষ্ঠা করা’র মধ্যে নামাজের যাবতীয় আরকান, আহকাম, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও মোস্তাহাব সব কিছুই অন্তর্ভূক্ত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাআতে নামাজ আদায়ের সময় কাতার বা সারিগুলো সুন্দরভাবে সোজা করার করার মাধ্যমে নামাজকে পরিপূর্ণ ও প্রতিষ্ঠা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস