বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: ফণীর প্রভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হল বৃষ্টি। রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলায় প্রভাব পড়লেও কলকাতায় পড়ল না প্রত্যক্ষ প্রভাব। বাংলাদেশ সংলগ্ন নদীয়, মুর্শিদাবাদ এবং দুই মেদিনীপুরে সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তা গণেশ কুমার বাস বলেন, কলকাতা ও রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় দুপুরের পর থেকেই কমবে বৃষ্টি। কলকাতা থেকে ৬০ কিমি দূরে রয়েছে ফণী। বাংলাদেশে সকাল ১০ টার পরেই ফণী প্রবেশ করবে। বাংলাদেশ সংলগ্ন জেলাগুলিতে তাই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা।
ফণীর আশঙ্কায় শুক্রবার সকাল থেকেই সন্ত্রস্ত ছিল গোটা দক্ষিণবঙ্গ। কখন ফণী আছড়ে পড়বে সে প্রহরই গুনছিল বঙ্গবাসী। আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল ওড়িশা পেরিয়ে খড়্গপুর দিয়ে এ রাজ্যে ঢুকবে ফণী। তার গতিবেগও প্রবল থাকবে। সকাল থেকেই তাই দিঘা, মন্দারমণি-সহ উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে হাওয়ার গতিবেগ বাড়ছিল। সেই সঙ্গে বৃষ্টিও চলছিল।
ফণীর প্রভাবে শুক্রবার বিকেলের পর থেকে রাজ্যের উপকূল এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি। রাতে তা আরও বেড়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগে থেকেই নীচু এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলি থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। দিঘায় সমুদ্র উত্তাল ছিল সারা দিনই। শঙ্করপুর-সহ উপকূল সংলগ্ন বেশ কয়েকটি গ্রামে সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে।
অন্য দিকে, নামখানা, সন্দেশখালি, বকখালি থেকেও লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাতে হাওয়ার বেগ ভালই ছিল এই অঞ্চলগুলিতে। মৎস্যজীবীদের আগেই গভীর সমুদ্রে না যেতে বলা হয়েছে। দিঘা, মন্দারমণি, তালসারি, শঙ্করপুর, বকখালি ও সাগরদ্বীপের পর্যটকদের জন্যও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
রাজ্য জুড়ে ফণীর প্রভাব কেমন
• আজ বিকেলের মধ্যে বাংলাদেশে ঢুকবে ফণী।
• ঝড়ের তাণ্ডবে দিঘায় গাছপালা উপড়ে গিয়েছে, বেশ কিছু ঘরবাড়িও ভেঙেছে।
• দিঘায় ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঝড়।
• ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়্গপুরের বুকে আছড়ে পড়ল ফণী।
• ওড়িশা পেরিয়ে রাত প্রায় সাড়ে ১২টা নাগাদ রাজ্যে ঢুকে পড়ল ফণী।
• কোনও কোনও জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায়।
• এই মুহূর্তে আরামবাগের কাছে রয়েছে ফণী।
• আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ফণীর প্রভাবে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলায় বৃষ্টি হবে।
• শঙ্করপুরে সমুদ্রের জল উপচে গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়েছে। লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে।
• হলদিয়াতে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া চলছে রাত থেকেই।
রাতের দিঘায় উত্তাল সমুদ্র। বাঁধ উপচে জল ঢুকছে সৈকত শহরে।
• দিঘাতেও হাওয়ার গতিবেগ বাড়ছে। সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে।
• বেশ কিছু জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে খড়্গপুরে।
• খ়ড্গপুরে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি চলছে।
• ফণীর প্রভাব পড়বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, নদিয়ায়।
• ফণী খড়্গপুর হয়ে বর্ধমান-হুগলির মাঝ দিয়ে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে।
• এখনও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই রয়েছে ফণী।
• আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ফণীর প্রভাব অনেকটা এলাকা জুড়েই থাকবে।
• পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বহু লোকাল ট্রেন বাতিল হয়েছে।
• বারাসত-হাসনাবাদ, শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার, শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর, শিয়ালদহ-ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা বিভাগ মিলিয়ে মোট ৩২ টি ট্রেন বাতিল হয়েছে।
• ফণীর প্রভাবে দক্ষিণ ভারত-ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ১০০টিরও বেশি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়েছে। শনিবার আরও কিছু ট্রেন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা