রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইসলামী ব্যাংকের সচেতনতা বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত ‘দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায় কানাডা কুমিল্লায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকির নির্দেশনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসেবার আওতাধীন খাতে ইউজার ফি আদায়ে নীতিমালার সুপারিশ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজলভ্য উৎস খোঁজার তাগিদ প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত সুইজারল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন স্পিকার জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: আইজিপি টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ইশরাক ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে কালশী ট্রাফিক বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশাচালকরা কমলাপুর আইসিডি’র নিয়ন্ত্রণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নিতে সুপারিশ ভোট কম পড়ার বড় ফ্যাক্টর বিএনপি : ইসি আলমগীর অভিবাসী কর্মীদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার

নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম, শহর রক্ষাবাধ হুমকিতে

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ৩১১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, আবুল হাসান সোহেল, মাদারীপুর প্রতিনিধি: চলতি মৌসুমে মাদারীপুরে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী যেন রুদ্রমুর্তি  ধারণ করেছে। এই দুই নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তীরবর্তী এলাকার মানুষ। আতঙ্কে রয়েছে নিকটবর্তী আরও কয়েকশ পরিবার। ইতোমধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে অসংখ্য বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। নদী ভাঙনে সম্প্রতি শিবচর উপজেলার সন্যাসীরচর, চরজানাজাত, দত্তপাড়া, নিলখী ও বহেরাতলা ইউনিয়নে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের শিকার হয়েছে দুটি বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য পরিবার উঁচু সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।ভাঙ্গনের শিকার সন্নাসীর চর ৮নং ওর্য়াডের জামে মসজিদটি। ব্যক্তিগত ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।তবে প্রশাসন থেকে এদিকে আড়িয়াল খা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে মাদারীপুর শহর শহরক্ষা বাধ এখন প্রতিনিয়ত হুমকির  মুখে রয়েছে। মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘুন্সি গ্রাম টি।

বিভিন্ন সুত্রে ও ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে জানা যায়, পদ্মা নদীর ও আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত  মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম। ভাঙনে এ উপজেলার সন্ন্যাসীরচরের খাসচর বাচামারা আজাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, সন্যাসীরচর ইউপি চেয়ারম্যান রউফ হাওলাদারের বাড়িসহ তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।দক্ষিণ বহেরাতলায় ইউনিয়নের প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাঁধের ৫০ মিটারসহ ২০টি ঘরবাড়ি, নিলখী ইউনিয়নের একটি মাদরাসাসহ ৪০টি ঘরবাড়ি, দত্তপাড়া ইউনিয়নের মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের ৫শ মিটার বাঁধসহ ৫০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।অন্যদিকে, পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে উত্তর চরজানাজাত ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের দ্বিতল ভবন, একটি গুচ্ছগ্রামসহ ৫০টি ঘরবাড়ি। এ এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে কমপক্ষে ৪শ একর ফসলি জমি। ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী দুই লাখ টাকা ও পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে তা অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরাা। সন্ন্যাসীরচর ইউপি চেয়ারম্যান রউফ হাওলাদার জানান, গত কয়েকদিনে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে তার বাড়িসহ ইউনিয়নের ৩শ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এমপি সাহেব দুই লাখ টাকাসহ চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে আরও সহায়তা প্রয়োজন।

শিবচর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে দুটি বিদ্যালয় ভেঙে গেছে। এতে শিশুদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কাউলিপাড়া গ্রামের নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের আনোয়ার চৌকিদার জানান, সরকার আমাদের এ পর্যন্ত কোন সাহায্যই দেয়নি। আমার সাজানো ভিটে বাড়ি ও ৬ বিঘা ফসলী জমি আড়িয়াল খাঁ গ্রাস করেছে। আমিসহ আমার পরিবার পরিজন এখন সর্বশান্ত। শুধু আনোয়ার চৌকিদার নয়, এরমত শত শত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সরকারী সাহায্য সহানুভূতির প্রতিক্ষায় বসে আছে।

অপর ভাঙ্গন কবলিত রহিম মিয়া বলেন, পদ্মায় আমাদের বসত-ভিটা সব কেড়ে নিল। সাহায্য করাতো দূরে থাক চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ আমাদের কোন খোঁজ নিতেও আসলো না।

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুব ফকির বলেন, পদ্মার ভাঙ্গনে ১নং ওয়ার্ড প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে। এ সকল এলাকায় দ্রুত সাহায্য প্রয়োজন।

কাউলিপাড়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও মাদানী কমপ্লেক্স এর অধ্যক্ষ আব্দুর রকিব বলেন, পদ্মা নদী এখন মাদ্রাসাটির খুব নিকটে এসে পড়েছে। যে কোন সময় মাদ্রাসাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যেই মহিলা মাদ্রাটি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। কওমী মাদ্রাসাটিও ভেঙ্গে অন্যত্র সরানো হবে। শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে শিবচর উপজেলা নির্বাহী ইমরান আহমেদ জানান, নদীভাঙগনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের অনেকের মাঝে ইতিমধ্যে ত্রান সামগ্রী দেয়া হয়েছে এবং আর্থিক সহায় দেয়া হয়েছে।প্রয়োজনে তাদের সবরকম সহযোগিতার জন্য স্থানীয় প্রশাসন সজাগ রয়েছে।

অপরদিকে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণ ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে মাদারীপুর শহর রক্ষা বাঁধসহ আশপাশের এলাকা নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। প্রবল বর্ষণ ও নদীর পানির ¯্রােত অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চঘাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ অনন্ত অর্ধশত বাড়িঘর যেকোন মুহূর্তে নদীগর্ভে তলিয়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মাদারীপুর শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় ইতোমধ্যে যে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছিল তা মেরামত করা হয়েছে। শহররক্ষা বাঁধ যাতে কোন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় সিসি ব্লুুক মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলো ফেলা হবে বলে পানি উন্নয়ন র্বোড জানিয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com