সরকারিভাবে পাথর আমদানি বন্ধের ঘোষণা না থাকলেও ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথরের কোনো গাড়ি বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না।এলসি করা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রায় শত কোটি টাকার পাথর আটকে আছে ভারতের ওপারে।
টানা দেড় মাস ধরে এই অঘোষিত বন্ধে স্থবির হয়ে পড়েছে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থল বন্দরের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম। এছাড়া ভুটান থেকে গত চল্লিশ দিনে পাথরের ট্রাক এসেছে মাত্র সাত থেকে আটটি।
এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। এছাড়াও আমদানি রপ্তানি বন্ধের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৪ হাজার শ্রমিক।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে গত দু’মাস আগেও ভারত থেকে আসা ট্রাক লোড-আনলোড, পাথর ভাঙা মেশিন এবং হেমার ও হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভাঙার শব্দে মুখরিত ছিলো এই বন্দর। এ পেশার সাথে জড়িত হাজারো নারী ও পুরুষ শ্রমিকের হাঁকডাকে এখানে ছিলো প্রাণচাঞ্চল্য।
গত ৯ জুলাই থেকে ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ভারতের পাথর রপ্তানিকারক সমিতি বন্ধের কারণ হিসেবে জানায়, সড়ক মেরামতের কারণে সাময়িকভাবে পাথর রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি মৌখিকভাবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অবগত করা হলে ব্যবসায়ীরা তা মেনে নেয়। কিন্তু দীর্ঘ চল্লিশ দিন ভারত থেকে পাথর বোঝাই কোনো ট্রাক না আসায় হতাশ হয়ে পড়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। এমনকি ডিপোতে জমানো পাথরও শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
আশিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই পাথর আসা শুরু হয়ে যাবে- এমন আশ্বাস দিয়ে আসছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। আমরাও ওই আশ্বাসের উপর ভর করে চল্লিশ দিন পার করেছি কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। এভাবে চললে আমরা পথে বসে যাবো।
নাঁকুগাও স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান জুয়েল বলেন, পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় আমাদের কোটি কোটি টাকা আটকা পড়ে আছে। এতে লসের মুখ দেখতে হচ্ছে আমাদের।
নাকুগাও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, গত জুন মাসে এ বন্দরে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮৫ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। আর জুলাই ও চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত দুই মাসে ভুটানের কিছু পাথর আসায় রাজস্ব আদায় হয়েছে নামমাত্র। আমদানি চালু থাকলে দুই মাসে রাজস্ব আদায় হতো প্রায় দেড় কোটি টাকা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ