মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আজিজ-বেনজীর কাদের সৃষ্টি, প্রশ্ন ফখরুলের মোবাইলের পাশাপাশি ল্যান্ডফোনে গুরুত্ব দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রাজধানীর ১৮ ওয়ার্ড ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা দূর করতে কাজ করছে ডিএমপি : জাইকা ট্রেনের ফিরতি যাত্রার আসন বিক্রি শুরু ১০ জুন অন্তরঙ্গ ছবি-ভিডিও ফাঁস, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন অভিনেত্রী রাজধানীতে ঝড়-বৃষ্টি-বাতাস, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ মৃত্যু ঝড়ের রাতে প্রবাসীর বাড়িতে দাদি-নাতিকে কুপিয়ে হত্যা বেনজীর, স্ত্রী ও মেয়ের বিও হিসাব অবরুদ্ধ এবি ব্যাংকের বোনাস লভ্যাংশ বিতরণে বিএসইসির সম্মতি খালেদা জিয়ার খনি দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি ৫ আগস্ট উপজেলা ভোট : আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ঝড়ে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ফায়ার ফাইটারের মৃত্যু গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, নিহত ছাড়াল ৩৬০০০ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত চাঁদপুরে, ঢাকায় ২২৪ মিলিমিটার দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু চট্টগ্রামে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত রপ্তানি বাড়াতে অঞ্চলভিত্তিক আম প্যাকেজিং হাউজ তৈরিসহ ৮ দাবি ফের যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা

দেশের ব্যাংকিং খাত এতিম ও বিকলাঙ্গ-সিপিডি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৮
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: দেশের ব্যাংকিং খাত সম্পূর্ণ এতিম ও বিকলাঙ্গ। আর এ খাতের রক্ষকরাই (বাংলাদেশ ব্যাংক) বিভিন্ন চাপে পড়ে নানাভাবে এতিম শিশুর ওপর অত্যাচার করছে। এক্ষেত্রে ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। নির্বাচনী বছরে এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে যা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অর্থনৈতিক মূল্যায়নে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তাদের মতে, চলতি অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। সংস্থাটি মনে করে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত সরকারি তথ্যে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। কারণ ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ গত তিন বছর পর্যন্ত স্থবির। এরপরও কর্মসংস্থান বাড়ছে।

বিপরীতে সামগ্রিকভাবে মানুষ আয় কমছে। অর্থাৎ দেশে আয়বিহীন কর্মসংস্থান হচ্ছে, যা অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম এবং গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতে দেশের উন্নয়নে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু অর্থনীতির নিয়মে উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৪টি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে। এর মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মানুষের আয় বৃদ্ধি, পণ্যের উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য থাকবে। যদি এই সামঞ্জস্য না থাকে, তবে এই ধরনের উন্নয়নের চিন্তার কারণ।

তিনি বলেন, গত বছর আমরা বলেছিলাম দেশে কর্মসংস্থানবিহীন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। অর্থাৎ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়ছে না। এ বছর আমরা বলছি আয়হীন কর্মসংস্থান। অর্থাৎ দেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে, কিন্তু মানুষের আয় বাড়ছে না। অর্থনীতিতে এটি নতুন তত্ত্ব।

তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন-সংক্রান্ত সরকারি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ৫টি বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে। সরকার বলছে, গত অর্থবছরে কর্মসংস্থান বেড়েছে। এই তথ্য যদিও ঠিক, তবে মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এক বছরে গড়ে মানুষের আয় কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয়ত, পুরুষের চেয়ে নারীদের আয় বেশি কমেছে। তৃতীয়ত, শহরের চেয়ে গ্রামের আয় মানুষের আয় আরও কমেছে। চতুর্থ, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। সবশেষে আয়ের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য বেড়েছে। খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেটের মানুষের আয় বেশি কমেছে। এর মানে হলো কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসংক্রান্ত সরকারের তথ্য সঠিক হলে ওই কর্মসংস্থান অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে হয়েছে। সেখানে আয় কম, শ্রমের অধিকার বা পরিবেশ নেই। অর্থাৎ দেশে আয়বিহীন কর্মসংস্থান হচ্ছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য। মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে নিজের ঘোষিত নীতি মানেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ মুদ্রানীতি ঘোষণার ৩ মাসের মধ্যেই নগদ জমার হার (সিআরআর) ১ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে তারল্য ঘাটতির কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, তারল্য ঘাটতি কোনো রোগ না। এটি রোগের উপসর্গ মাত্র। বড় সমস্যা হলো বিকলাঙ্গ ব্যাংকিং ব্যবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো বলেন, নির্বাচনী বছরে বড় একটি আশঙ্কার কারণ টাকা পাচার। নির্বাচনী খরচ মেটাতে বিদেশ থেকে যেভাবে রেমিট্যান্স (প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ) আসে, তার চেয়েও বেশি বিদেশে টাকা পাচার হয়। এক্ষেত্রে দেশে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা থাকলে আরও বেশি টাকা পাচার হয়। এই প্রক্রিয়ায় টাকা তছরুপের তিনটি খাত রয়েছে। এগুলো হল ব্যাংকিং খাত, শেয়ারবাজার এবং আমদানি খাত। ব্যাংকঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়। ফলে খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক আচরণ সৃষ্টি হয়। হঠাৎ করে নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। আবার কিছুদিন পর পতন ঘটে। ফলে নির্বাচনী বছরে পুঁজিবাজার আবার তেজি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

দেবপ্রিয় বলেন, চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ে নিয়ে বড় ধরনের শঙ্কা রয়েছে। গত বছর সিপিডি বলেছিল, রাজস্ব আদায়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। এ বছরের হিসাব বলছে, বছর শেষে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। ফলে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয়ও কমবে। অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটে বড় অঙ্কের কাটছাঁট করতে হবে। এ কারণে সিপিডি বলছে, বাজেট ঘোষণার সময় বড় অঙ্কের ফিগার না দেখিয়ে একটু বাস্তবধর্মী হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাজেটের আকার নিয়ে আর্থিক ভ্রম সৃষ্টি করা হয়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মূল জিনিস কম পানি বেশি। এবারের বাজেটেও মূল জিনিসের চেয়ে পানি বাড়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ বাস্তবায়ন অসম্ভব হলেও নির্বাচনী বছরে বড় ব্যয় দেখানোর প্রবণতা থাকে।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মানুষের আয়ে বৈষম্য বেড়েছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের ব্যাপারে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, তা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নৈতিকভাবে অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত।

তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, কর্পোরেট কর কমানোর ব্যাপারে বিভিন্ন দাবি আসছে। এগুলোর কমানোর আরও বেশি বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। ফলে মুদ্রা ও রাজস্বনীতির মধ্যে আরও সমন্বয় জরুরি।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে অবস্থা খুবই খারাপ। ফলে এখাতে নজরদারি বাড়ানো জরুরি। অন্যদিকে আরেকটি বিষয় বিবেচনায় নেয়া উচিত। জনগণের করের টাকায় সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধনের জোগান দেয়া হচ্ছে। এর মানে হলো দুর্নীতির মাধ্যমে মূলধন ক্ষতিকে করের মাধ্যমে ভতুর্কি দেয়া হচ্ছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয়।

তার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেনের ভারসাম্যে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com