যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন তাদের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির সৈয়দ রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর নোয়াখালী টাওয়ারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
সাধারণ জনগণের উদ্দেশে সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে, দুর্নীতি-জুলুম-অন্যায় ঘৃণা করেন তারা নির্বাচনে যাবেন না। একই সঙ্গে যারা আল্লাহকে ভয় করেন, যারা মজলুমের বদদোয়াকে ভয় করেন, তারা ভোট দেবেন না।
চরমোনাই পির বলেন, একটি সভ্য-স্বাধীন দেশের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আমরা সরকারকে বারবার সতর্ক করেছি। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা, নির্বাচন নামের তামাশা, জুলুম, নির্যাতন, লুটতরাজ ও দুর্নীতি থেকে সরিয়ে রাখার জন্য এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, গণ অধিকারসমূহ রক্ষায় সকল পন্থা অবলম্বন করেছি।
রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, জনমত গঠন ও জনমতের প্রকাশসহ সম্ভাব্য সব কিছুই আমরা করেছি। প্রত্যাশা ছিল, সরকারে থাকা ব্যক্তিদের বোধদয় ঘটবে; তারা দেশকে গৃহযুদ্ধ ও সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবে না। অর্থনীতি এবং জনগণের জীবনযাত্রাকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে না।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যেভাবে ক্ষমতায় থাকার একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, তারই একটি বিকৃত উপস্থাপনা হিসেবে আমরা বর্তমান সমস্যাকে বিবেচনা করছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমান সরকারের কার্যক্রম আরও বেপরোয়া।
তিনি বলেন, সরকারের আজ্ঞাবহ দলদাস নির্বাচন কমিশন আগামী ৭ জানুয়ারি প্রহসনমূলক একতরফা নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নির্লজ্জ নির্বাচন কেউ কখনো দেখেছে বলে মনে হয় না। ক্ষমতাসীন সরকার ২০১৪ সালে করলো একতরফা প্রহসনের নির্বাচন, ২০১৮ সালে করলো রাতের ভোট আর ২০২৪ সালে এসে করছে ডামি নির্বাচন।
নিজ দলের একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন নামে দাঁড় করানো, জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিরোধী নেতাদের নির্বাচনে দাঁড় করানো, কিংস পার্টি গড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানোর অপচেষ্টা করার মতো এই সরকার যা করছে, তাতে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম নির্বাচনের উদাহরণ হয়ে থাকবে এই নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে কতবড় নোংরামী হয়েছে তার উদাহরণ হয়ে থাকবে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য। তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ার শর্তে কারাগারে থাকা সকল বিরোধী নেতাকে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।’
তার এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে, কারাগারে থাকা না থাকার মতো যে বিষয় আদালতের ওপরে নির্ভরশীল তাও এখন এই সরকার কুক্ষিগত করে নিয়েছে। তাই দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাবো ভোটদানে বিরত থাকতে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দে বিল্লাহ আল মাদানি, আশরাফ আলী আকন্দ, মহাসচিব ইউনুস আহমদসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ