দেশ নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। তাদের আগ্রহ কেবল খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি। তারা সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চান। আমরাও চাই, কারণ তার সাজা কার্যকর করতে হবে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে তারা জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছি না, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি থাকবে। কারণ আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, ক্ষমতায় থাকলেও আমরা কর্মসূচি দেব, না থাকলেও।
এর আগে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। এ সময়ে বিএসপির সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু ও সেক্রেটারি এম জি কিবরিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার গণমাধ্যমবান্ধব। দেশে সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। পৃথিবীর অনেক বড় দেশেও সংবাদমাধ্যম নেই। বের হয় না ১০০ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে যেসব পত্রিকা কেবল বিজ্ঞাপন দিলেই বের হয়, যারা কেবল তদবির করে বেড়ায়, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। কারণ তাদের কারণে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিজ্ঞাপন কমে এসেছে। আগে চারশর বেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো, এখন তা পঞ্চাশে নেমে এসেছে।
বিএসপি পক্ষ থেকে বলা হয়, কাগজের দাম ও প্রিন্টিং উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। তাদের সংবাদপত্র বর্তমান সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়ন ধারাকে সাধারণ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠ ভূমিকা রেখে আসছে। জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সরকারের সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়ন, অগ্রগতি ও সাফল্যের সংবাদ প্রচার করে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনায় আন্তরিক ভূমিকা রেখে আসছে।
তারা মন্ত্রীর কাছে ১৫টি দাবি তুলে ধরেছেন। যার মধ্যে রয়েছে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত ক্রোড়পত্রের সব বকেয়া বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করা, জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রণীত ক্রোড়পত্র নীতিমালা অনুযায়ী ইস্যু করা, মিডিয়া তালিকাভুক্ত দৈনিক সংবাদপত্রের সুষ্ঠু বিজ্ঞাপন বন্টন ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরের বিভিন্ন কমিটিতে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
এছাড়াও বিজ্ঞাপন বণ্টন ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয়করণ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ফিরিয়ে আনা, বিজ্ঞাপন ইনসারশন বৃদ্ধি করে সর্বনিম্ন ১০টি করা, মিডিয়াতালিকাভুক্ত বহির্ভূত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, ডিএফপির ৯ম ওয়েজ বোর্ড মনিটরিং কমিটিতে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
বিএসপির দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর পরিচালনা বোর্ডে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা পরিষদে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের পরিচালনা পরিষদে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর পরিচালনা পরিষদে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালনা পরিষদে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, ঢাকা ওয়াসার পরিচালনা পরিষদে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সভা, সেমিনারে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি)’র প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া।
বাংলা৭১নিউজ/এসএন