ভারতে তরুণীকে নির্যাতন করে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় বেরিয়ে আসে টিকটক ফাঁদে ফেলে নারীদের বিদেশে পাচার করার বিষয়টি। টিকটকের আড়ালে নারী পাচারের পুরো নেটওয়ার্কটির সন্ধানে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অনুসন্ধানে নেমে ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। শত শত তরুণ-তরুণীদের নিয়ে প্রায়ই পার্টির আয়োজন করতেন হৃদয় বাবু। আর এসব পার্টি ছিল হৃদয়ের নারী পাচারের মূল প্ল্যাটফর্ম। হ্যাংআউট পার্টি ও পুল পার্টিই ছিল টিকটক হৃদয়ের নারীদের ফাঁদে ফেলার মূল অস্ত্র। এ দুই ধরনের পার্টির মাধ্যমে বন্ধত্বের কৌশলে তরুণীদের পাচার করে দিত হৃদয়।
হৃদয় বাবুর পুল পার্টি এবং হ্যাংআউটে অংশ নেওয়া অনেকের কাছেই ছিল স্বপ্নের মতো। কারণ এসব পার্টিতে মিলত তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ। পার্টিতে থাকতো সব ধরনের আয়োজন। হৃদয়ের পুল পার্টিতে অংশ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ত উঠতি টিকটকাররা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্রি হয় এসব পার্টির টিকিট। উচ্চ শব্দে মিউজিকের তালে নাচানাচি! সুইমিং পুলে উশৃঙ্খল নাচানাচির মধ্যেই নারীর সান্নিধ্যে আসে তরুণরা। অবৈধ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকে থেকে আসা বখাটেরা। উঠতি বয়সী তরুণদের আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করা হয় তরুণীদের। আনন্দের আড়ালে চলে নগ্নতা!
পার্টিতে অংশ নেওয়া তরুণীদের মধ্যে থেকেই টার্গেট করা হত। বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচার করতো ভারতে। পাচার হওয়ার পর পালিয়ে আসা এক ভুক্তভোগী কিশোরী জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, পুল পার্টিতে মাদক সেবন হয় অতি মাত্রায়। ওখানে টিকটক ছাড়াও আরও অনেক কিছু হয়।
টিকটক স্টার হতে চায় এমন ৫ শ’ টিকটক গ্রুপ, আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক আইডি শনাক্ত করেছে পুলিশ। সবই রয়েছে নজরদারিতে।
ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার শহিদুল্লাহ বলেন, বিদেশে পাচার করার পর যেসব মেয়েরা ওখানে গেছেন, তাদেরকে প্রথমেই নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে চিত্র ধারণ করে তাদেরকে জিম্মি করা হত। পরে এসব ভিডিও দেখিয়ে বেকায়দায় ফেলে তাদেরকে খারাপ কাজে বাধ্য করা হত। ওই তরুণীদেরকে বিভিন্ন হোটেলে নির্দিষ্ট সময় করে পাঠিয়ে খারাপ কাজ করতে বাধ্য করত হৃদয়।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে