বাংলা৭১নিউজ, পটুয়াখালী: বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই তেঁতুলিয়া নদীর অব্যাহত ভাঙনে পটুয়াখালীর দশমিনার উপজেলার অন্তত ১৭টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে সরকার কর্তৃক খাসজমি বন্দোবস্ত না দেওয়ার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জানা যায়, বাউফল উপজেলা তেঁতুলিয়া নদীর ক্রমাগত ভাঙনে প্রায় ২৩ হাজারেও বেশি একর ফসলি জমি, ১১ কিলোমিটার ও অধিক বেড়িবাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ১৭ গ্রাম নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে অন্তত কয়েক হাজার পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নে নদী ভাঙনে ভোলাইশিং, বেলচর, কালীরচর, চঙ্গারচর, চরতৈলাক, চরভুপেন্দ্র, পাতারচরসহ সাতটি গ্রাম সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে রয়েছে রণগোপালদী ইউনিয়নের চরঘুনি, আউলিয়াপুর, দক্ষিণ রণগোপালদী, উত্তর রণগোপালদী, চরশাহজালাল, চরবোরহান, দশমিনা ইউনিয়নের হাজিরহাট, গোলখালী, কাটাখালী, চরহাদী, কাউয়ারচর, সৈয়দ জাফর ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রাম, চরবাঁশবাড়ীয়া, চরবোরহান, চরসাইমুন, ঢনঢনিয়া গ্রামসহ অন্তত ১৭টি গ্রাম।
নদী ভাঙনে নিঃস্ব আমজাদ আলী ফকির জানান, তেঁতুলিয়া নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে অপরিকল্পিতভাবে বনায়ন করায় নদীর স্রোতের গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়ে দশমিনা উপজেলার মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানছে। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুম ও গ্রীষ্মের শুরুতে উপজেলার তীরবর্তী এলাকা ভেঙে মূল ভূখণ্ডের আয়তন হারাচ্ছে।
অপরদিকে নতুন, নতুন চর জেগে উঠে দ্বীপচরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারা পরিবারগুলো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দশমিনার নদী ভাঙন রোধের সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এলাকাবাসী জানান, এখনও বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি। কিন্তু ভাঙন ক্রমশই বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর নদীর ভাঙনের তীব্রতায় প্রতিদিন প্রায় শত একর ফসলি জমিসহ বেড়িবাঁধ বিলীন হতে শুরু করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/কেএইচ