আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের বিচার করা হবে- এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেননি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন- অনেক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠছে। এই ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদেরও বিচার হবে নাকি। তখন আমি বললাম, ট্রাইব্যুনালে কাদের কী বিচার হবে, এটা তো আমি বলার ব্যাপার না।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর বলতে পারবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, এখানে সুবিচার হবে, বিচার হবে না। সাংবাদিকদের ট্রাব্যুনালে বিচার হবে আমি এ কথা বলিনি।’শুক্রবার সকালে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের আজকের সংবাদপত্র অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢালাও মামলা দায়েরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিগত সরকারের সহযোগিতায় গায়েবি মামলা হতো। এগুলো পুলিশ করত। মামলাগুলো তৎকালীন বিরোধীদলের লোকদের বিরুদ্ধে হতো। এখন হচ্ছে ঢালাও মামলা।
যারা পূর্বে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তারাই এই মামলা করছে। এই মামলাগুলোতে যাতে নিরাপরাধ লোক শাস্তি না পান সে বিষয়ে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।’শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনার বিষয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তি করার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কল্পনাও করেননি, এই চুক্তির অধীনে ওনাকে চাওয়া হতে পারে। এই চুক্তি যদি ভারত ঠিকমতো পালন করে, তাহলে অবশ্যই শেখ হাসিনাকে তাদের ফেরত দেওয়া উচিত।
কারণ এই চুক্তিতে আছে, কারো বিরুদ্ধে যদি প্রসিডিং শুরু হয়, শুধু চার্জশিট হলে বা শাস্তি পেলে না প্রসিডিং শুরু হলেই তাকে প্রত্যপর্ণের জন্য এক দেশ আরেক দেশের কাছে চাইতে পারে।’তিনি আরো বলেন, ‘এই চুক্তিতে বলা আছে, পলিটিক্যাল অপেন্স হলে চাওয়া যাবে না। আবার বলা আছে, মার্ডারকে পলিটিক্যাল অপেন্স ধরা যাবে না। গুরুতর আঘাত করা, এগুলোকে এক্সটার্মিনেশন করা, যা পলিটিক্যাল অপেন্স ধরা হবে না। এখন ভারত যদি এই চুক্তিকে নিজের ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা করে, তাহলে আমাদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে অত্যন্ত কড়াভাবে প্রতিবাদ করা হবে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা হত্যা হলে এক দেশ আরেক দেশ থেকে বন্দি নিয়ে আসতে পারে। এই চুক্তির ফলে আনাও হয়েছে। আন্দোলনে হাজারের বেশি খুন হয়েছে, সেখানে আনা যাবে না?’
স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এ বিচার হচ্ছে না, এমন অভিযোগ ওঠলে আপনার কী করবেন- প্রশ্নের জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচার হচ্ছে না এ ধরনের এক্সসেপশন এখানে নেই। বলছে- সরল বিশ্বাসে করা হচ্ছে না। বিচার প্রক্রিয়া তো পরে, সরল বিশ্বাসে করা হচ্ছে না। তাহলে কি কুটিল বিশ্বাসে করা হচ্ছে? যদি…ব্যাখ্যা দেয় আমাদের কাউন্টার অনেক লিগ্যাল আর্গুমেন্ট থাকবে। আমরা এটা ছাড়ব না। আমি খুবই কনফিডেন্ট, এই চুক্তি যদি সততার সঙ্গে ইন্টারপ্রেট করে, তাহলে অবশ্যই ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ