রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টুসহ পলাতক ৮ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, ২০ জুন ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। এ মামলায় ৯ আসামি পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পলাতকদের বিষয়ে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১৭ আগস্ট ধার্য করেন আদালত। তবে বুধবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে ৮ আসামি পলাতক রয়েছেন। এদের গ্রেপ্তার করা যায়নি মর্মে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আদালত তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দেন।
শাহজাহানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর শাহ আলম এসব তথ্য জানান।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, প্রধান সমন্বয়কারী সুমন সিকদার মুসা, শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন, তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান, সেকান্দার শিকদার আকাশ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মাতবর, আবু সালেহ শিকদার, কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব, মোরশেদুল আলম পলাশ, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল।
এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ফ্রিডম মানিক, সন্ত্রাসী জিসান, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আমিনুল, ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, সোহেল রানা মোল্লা, রিফাত হোসেন ও শামসুল হায়দার উচ্ছল পলাতক রয়েছে।
গত ৫ জুন ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। যদিও তদন্তে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত বছর ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনী কাঁচা বাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী প্রীতি। টিপুর গাড়িচালক গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ