বাংলা৭১নিউজ, মোঃ নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: মৌসুমে টানা বর্ষণে ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকা। বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিটুমিন উঠে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ। এতে করে অত্যান্ত ব্যাস্ত এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে ধীর গতিতে।
সরেজমিন দেখা যায়, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপুর্ণ গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত। অথচ এই এলাকা টুকু একেবারে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অত্যান্ত ব্যাস্ত মহাসড়কের এই ১৩ কিলোমিটার এলাকায় শত শত খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচল মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। সড়কের গর্তের জন্য ঘটছে ছোটখাট দূর্ঘটনাও। গত ঈদের আগে মহাসড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করলেও বৃষ্টির কারনে এক মাস যেতে না যেতেই অত্যান্ত বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। গত ৮/৯ দিন ধরে মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচলে দুরবস্থা এবং যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন যানবাহনের চালক ও সাধারণ যাত্রীরা।
একে ট্রাভেলস পরিবহনের (নং ঢাকা মেট্টে ব-১৪-৫৪২৭) চালক মো. মিন্টু জানান, মহাসড়কের সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে টানা বৃষ্টি। এতে মহাসড়ক ভরে গেছে অসংখ্য খানাখন্দে। যে কারণে একদিকে যেমন গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে অপরদিকে নষ্ট হচ্ছে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। খানাখন্দের কারণে গাড়ির অতিরিক্ত ঝাকুনীতে অনেক যাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।
একই পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট সুপার ভাইজার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি গুলো গন্তব্যে পৌছাতে পারছে না। খানাখন্দের কারণে অহরহ টায়ার ফেঁটে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। আসন্ন কোরবানীর ঈদের আগে সড়ক সংস্কার কাজ না করলে ঈদে ঘরমুখী মানুষ ও গরু বোঝাই ট্রাক চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণের বরিশাল, খুলনা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলার যানবাহনগুলো আলাদা আলাদা মহাসড়ক হয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে এসে এক সড়কে মিলিত হয়। যে কারণে অন্যান্য মহাসড়কের চেয়ে এই ১৩ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের চাপ থাকে বেশি। অপরদিকে ফেরি ঘাটে পৌছে আগে ফেরির নাগাল পেতে চালকেরা এক প্রকার গতির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় এই এলাকায়।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) রাজবাড়ী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম জানান, বিটুমিনের প্রধান শত্রু পানি। দিনের একটা লম্বা সময় মহাসড়ক ভিজে থাকছে। ভেজা সড়কের উপর দিয়ে যানবাহনও চলাচল করছে। এতেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ এই মহাসড়ক সংস্কারের জন্য বিশেষ কোন বরাদ্দ না পেলেও তারা গুরুত্ব বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। আগামী ঈদের আগে শুধু গর্ত ভরাট ছাড়া নতুন কাপেটিংয়ের কোন সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানান।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস