বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ

ঝিরি থেকে জলবিদ্যুৎ মহসীনের আলোয় আলোকিত পাহাড়ের ৪২ পরিবার

বান্দরবান প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৮ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবানে পাহাড়ি ঝিরির পানি প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মহসীন। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে আলোকিত করেছেন পাহাড়ে বসবাসকারী ৪২টি পরিবার। তবে আর্থিক সমস্যার কারণে পুরো পাড়াবাসী বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারছেন না। তাই সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

বান্দরবানের থানছি সদর উপজেলা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে দুর্গম পাহাড়ি পল্লী নকতোহা পাড়া। পাড়ার পার্শ্ববর্তী ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে ঝর্নার প্রবাহ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প খরচে উৎপাদিত এ বিদ্যুৎ পেয়ে খুশি পাহাড়ে বসবাসকারী ত্রিপুরা পরিবারগুলো।

jagonews24

স্থানীয়রা জানান, নকতোহা পাড়াটি থানচি সদর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে হলেও দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পরও এখানে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। সম্প্রতি জলবিদ্যুতের আলো পেয়ে নতুন স্বপ্ন বুনছেন এ পাড়ায় বসবাসরত ৪২টি পরিবারে প্রায় ৩০০ দরিদ্র মানুষ। তবে ঝিরিতে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় অনেক বাসিন্দাই তা কিনতে অক্ষম।

পাড়ার বাসিন্দা রমেন ত্রিপুরা জানান, পাহাড়ি ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারায় অত্যন্ত খুশি পাড়ার বাসিন্দারা। তবে পাড়ায় বসবাকারীরা অত্যন্ত গরিব জুমচাষি। ফলে সবাই বিদ্যুতের এ সেবা নিতে পারছেন না। তারা সরকারি সহায়তা চাইছেন।

আরেক বাসিন্দা জসারু ত্রিপুরা জানান, মহসীন নিজ উদ্যোগে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ থেকে পাড়ার ৪২ পরিবারকে বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছেন। পাড়ায় আরও বাসিন্দা থাকলেও সবাইকে তার একার পক্ষে এ সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সরকারি সহায়তা চাই।

উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মহসীন জানান, শৈশবে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। কাজ শিখে দক্ষ টেকনিশিয়ান হয়ে নিজেই গড়ে তোলেন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির ওয়ার্কশপের যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ করতে করতে মনের বাসনা জাগে জলবিদ্যুৎ উদ্ভাবনের।

সেই বাসনায় ছয় মাস আগে থানচির বাসিন্দা বন্ধু মাংসার ম্রোর সহযোগিতায় নিজস্ব অর্থায়নে সদর ইউনিয়ন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নকতোহা পাড়ার ক্যছুং ঝিরিতে পরীক্ষামূলকভাবে জলবিদ্যুৎ উদ্ভাবনের উদ্যোগ নেন। পাহাড়ের শত বাঁধা-বিপত্তি ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ঝিরিতে স্বল্প উচ্চতায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ঝর্নার প্রবাহকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে এই বিদ্যুৎ উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

jagonews24

তিনি আরও জানান, পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয় তার। বর্তমানে এ প্রকল্প থেকে ৮ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যা দিয়ে ৪২টি পরিবারকে আলোর আওতায় আনা সম্ভব। তবে ফ্যান, টিভি ও ফ্রিজসহ অন্য চাহিদা পূরণ করতে হলে প্রকল্পে আরও ২৫-৩০ লাখ টাকা ব্যয় করতে হবে।

নকতোহা পাড়ার কারবারি (পাড়া প্রধান) রাম বাহাদুর ত্রিপুরা জানান, নকতোহা পাড়াটি থানচি সদর ইউনিয়নের খুব কাছে হলেও তারা বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত। মহসীন যখন এ প্রকল্পটি শুরু করেছিল তখন পাড়াবাসী বিশ্বাস করতে পারেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ডেভিড ত্রিপুরা জানান, পাহাড়ি ঝিরি ও ঝর্নায় বাঁধ দিয়ে স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন দেখে অবাক হওয়ার পাশাপাশি পাড়াবাসী খুব খুশিও। এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হলেও আর্থিক সমস্যার কারণে পুরো পাড়াবাসী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিতে পারছেন না। স্বল্প খরচে দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্পে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দুর্গম এলাকার বিদ্যুৎ বঞ্চিত বাসিন্দাররা উপকৃত হবে।

এ বিষয়ে থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অং প্রু ম্রো জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর অতিবাহিত হতে চললেও এখনো বান্দরবানের থানচি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় অসংখ্য পাহাড়ি পরিবার বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এরূপ প্রকল্পের মাধ্যমে ওইসব এলাকার লোকজনদের বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব।

বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন জানান, এ ধরনের উদ্যোগ নিসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে এ ধরনের প্রকল্প তার দপ্তরাধীন না হওয়ায় সার্বিক সহযোগিতা করতে না পারলেও তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিদর্শন করে পরামর্শ দেবেন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com