বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) আজ জামায়াতের ২৫ নেতার প্রার্থিতা নিয়ে হাইকোর্টের রুলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইসি আজ জরুরি সভা আহ্বান করেছে। আজই জানা যাবে জামায়াত নেতারা ভোট করতে পারবেন কিনা।
বিকাল সাড়ে ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ২৫ নেতার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইসিতে চার ব্যক্তির করা একটি রিট আবেদনের শুনানি করেন হাইকোর্ট। আদেশে ওই নেতাদের প্রার্থিতার বিষয়টি ইসিকে তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা হাইকোর্টের চিঠিটা আজ (বৃহস্পতিবার) পেয়েছি। বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আইন শাখাতে বলেছি। যাতে কমিশনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে-তিন কার্যদিবসের মধ্যে রুলের নিষ্পত্তি করতে। আমরা যেহেতু আজকে পেয়েছি, আমাদের হাতে আরও দুই কার্যদিবস আছে । এই সময়ের মধ্যে (সোমবার) আমরা একটি সিদ্ধান্ত দিয়ে দেব।
রিট আবেদনটি করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, মো. আলী হোসেন, মো. এমদাদুল হক ও হুমায়ুন কবির। রিটে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ২২ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনজন জামায়াত প্রার্থীর ভোটে অংশগ্রহণের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়।
আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবারের শুনানিতে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৯ সালে রিট করা হয়। পরে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। ওই রায়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) এবং ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধান পরিপন্থী। রায় এখনও বহাল।
তিনি বলেন, যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধন নেই, সেহেতু ওই দলের কোনো নেতা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে পারছেন না। অন্য দলের প্রতীকেও তাদের ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এর পরও জামায়াতের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে ইসি হাইকোর্টের রায় ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের বিভিন্ন বিধির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, জামায়াতের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা, সেটি দেখার দায়িত্ব ইসির। কমিশনের কাজ আমরা করব না। আমরা শুধু রুল জারি করতে চাই। পরে হাইকোর্ট আজ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতের ২২ নেতা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনজন করছেন স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন। তারা হলেন-ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরোয়ার, কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ, পাবনা-৩ আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা-৫ ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন, ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, নীলফামারী-২ মো. মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট-৩ ওয়াদুল শেখ, বাগেরহাট-৪ আসনে আবদুল আলীম এবং চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ