বাংলা৭১নিউজ, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা নিরসণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঐ স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসি।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় জলাবদ্ধতা নিরসণের দাবিতে তারা স্কুলের সামনের প্রধান সড়ক বাঁশ দিয়ে আবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জলাবদ্ধতা নিরসণের স্থায়ী সমাধান করা হবে জানালে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায় বিগত এক মাস যাবৎ স্কুলের সামনে বৃষ্টির পানি আবদ্ধ হয়ে থাকায় ছাত্ররা হাঁটু পানিতে হেঁটে স্কুলে গিয়ে ভেজা কাপড়ে ক্লাস করে। এতে তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগীতা হ্রাস পাচ্ছে, ভেজা কাপড়ে থাকার কারণে জ¦র, সর্দি, কাশি সহ চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। এর আগে রমজান মাসে স্কুল ছুটির পূর্বেও এমন জলাবদ্ধতা ছিল। রমজানের পরে সমাধানের জন্য তখনও তারা এমন বিক্ষোভ করেছিল। কিন্তু সাময়িকভাবে ড্রেন কেটে পানি নামার ব্যাবস্থা করলেও স্থায়ী সমাধান না করায় বর্তমানে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিগত কয়েক মাস ধরে জেলা প্রশাসক, মেয়র বরাবর চিঠি প্রদান করেও এর কোন সমাধান তারা পাচ্ছেন না বলে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায় এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম নাটোর পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম দিক দিয়ে হাফরাস্তা হয়ে প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে ৫ফুট চওড়া একটি ড্রেন এন,এস, সরকারি কলেজের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নারদ নদে সংযোগ দেয়া হয়েছিল। তাতে করে স্কুলের আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার পানি ঐ ড্রেন দিয়ে নারদ নদে পড়ার কারণে কখনোই অত্র এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পূর্বের ৫ ফুট প্রশস্ত ড্রেনটির প্রধান সড়ক হাফরাস্তা অংশ হতে এন,এস, সরকারি কলেজ মাঠ পর্যন্ত অংশটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। আর তাতেই এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসি অভিযোগ করেন। এই জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার অনেকের বাড়িতে পানি উঠেছে, হাঁটা চলা, রান্না-বান্না করা মুশকিল হয়ে পড়েছে, অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতেও অনেকের বেগ পেতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসি জানান। তারা অবিলম্বে অত্র স্থানে পূর্বের মত ড্রেন দাবি করেন।
নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম জলাবদ্ধতার স্থান পরিদর্শন করে জানান এভাবে স্কুলের সামনে রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসি যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তা দুঃখজনক। তবে বর্ষা মৌসুমে ড্রেন সংস্কারের কাজ শুরু করা অসুবিধা জনক। তাই তিনি শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করার পরামর্শ দেন।
সরেজমিন পরিদর্শন শেষে হাফরাস্তায় অবস্থিত একটি অফিসে নাটোর জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, নাটোর পৌরসভা মেয়র উমা চৌধুরী জলি, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ ও নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ আলীর উপস্থিতিতে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন সাময়িকভাবে জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য স্কুলের দক্ষিণপাশে অবস্থিত ইয়ার আলীর পুকুরে মাটি কেটে ড্রেন করে পানি নামার ব্যাবস্থা এবং প্রধান সড়ক থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় বালুভর্তি বন্তা ফেলে স্কুলে ছাত্রদের নির্বিঘেœ যাবার ব্যাবস্থা করে দেবার নির্দেশনা দেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস