বেতন-ভাতা ও ছুটি নিয়ে ক্ষোভের জেরে ‘এমভি বাখেরা’ জাহাজের লস্কর আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান সাতজনকে খুন করেন বলে বুধবার জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বাহিনীটি জানায়, চাঁদপুরের জাহাজে সাত খুনের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অভিযুক্ত আকাশ মন্ডলকে মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরের দিন বুধবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১-এর উপঅধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
তিনি জানান, অভিযানে আকাশ মন্ডলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ঘুমের ওষুধ, ভুক্তভোগীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ, রক্তমাখা ডেনিম (জিন্স) প্যান্ট ও গ্লাভস জব্দ করে র্যাব।
মেজর সাকিব হোসেন জানান, আকাশ মন্ডল গত আট মাস ধরে এমবি বাখেরা জাহাজে চাকরিরত ছিলেন। জাহাজের মাস্টার কর্মচারীদের ওপর বিনা কারণে রাগারাগি ও বিল ভাউচার একাকী ভোগ করার কারণে আকাশ মন্ডলের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে ২২ ডিসেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অজ্ঞান করেন আকাশ। এরপরই জাহাজের মাস্টার কিবরিয়াকে তার নিজের কক্ষে জাহাজের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন।
তিনি জানান, খুনের পর ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে একে একে অন্যদেরকেও একই চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন আকাশ। পরে ২৩ ডিসেম্বর রাতে একটি ট্রলারে করে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
একই দিন চাঁদপুরের হাইমচর থেকে আল বাখেরা জাহাজে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে শৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে নেয়া হলে তাদেরও মৃত্যু হয়।
র্যাব জানায়, একমাত্র জীবিত জাহাজের কর্মচারী জুয়েলের দেয়া তথ্য অনুসারে নিবিড় তদন্তে র্যাব ২৪ ডিসেম্বর রাতে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে থেকে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এর পরই তাকে নিয়ে আসা হয় র্যাব কুমিল্লা সিপিসি-২-এর কার্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান এ সাতজনকে খুনের ঘটনা র্যাবের কাছে স্বীকার করেন।
ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো কারণ কিংবা অন্য কেউ জড়িত আছেন কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান মেজর সাকিব হোসেন।
গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানের বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরহাটে, যার বয়স ২৬ বছর।
এর আগে সাত খুনের ঘটনায় চাঁদপুরে মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ