মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতায় খুব বেশি খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে ৮ পরিচালক নির্বাচিত রংপুরের বিপক্ষে এবার ঢাকা অলআউট ১১১ রানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহত বেড়ে ৯৫ স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনের কর্মসংস্থানের প্রস্তাব

চলনবিলাঞ্চে ভাসমান নৌকায় পড়ালেখা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৮
  • ৫৫৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, আফতাব হোসেন, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনায় তিনটি উপজেলার বিলাঞ্চলে ভাসমান নৌকায় স্কুল, স্বাস্থ্য সেবা, কৃষি শিক্ষা ও পরামর্শ কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রত্যান্ত গ্রাম এবং বিল অঞ্চলের মানুষের পাশে নদী পথে নৌকায় স্কুল, স্বাস্থ্য ও কৃষি সেবা কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে এসেছে সিধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা। বিলাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শিক্ষা বঞ্চিত ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি ঔ অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সেবা ও কৃষি বিষয়ক পরামর্শ পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন প্রতিদিন।

পাবনা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিঃ দূরে ভাঙ্গুড়া উপজেলা। এই উপজেলার ঠিক শেষ প্রান্তে দিলপাশা ইউনিয়নের পাঁচপঙ্গুলী গ্রাম। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গুমানী নদীতে চলছে ভাসমান নৌকায় স্কুল ও স্বাস্থ্য সেবার মত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। সিধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা নামে একটি বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যেগে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২০০২ সালে একটি ভাসমান নৌকা দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও গ্রামের মানুষের চাহিদা অনুসারে ১৮টি নৌকায় দাড়িয়েছে। ১২টি নৌকায় চলছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম, তিনটিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও তিনটিতে দেয়া হয় কৃষি শিক্ষা সেবা। এই কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে সম্প্রতি আরো দুটি নৌকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন টারকিস কোপারেশন এন্ড কডিনেশন এজেন্সি নামে একটি তুর্কিজ প্রতিষ্ঠান। এনিয়ে এখন মোট নৌকার সংখ্যা ২০টি।

স্ব-নির্ভর সংস্থার প্রকল্প পরিচালক সুপ্রকাশ পাল জানান, পাবনার চলনবিল অঞ্চলের তিনটি উপজেলা ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও ফরিদপুর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার শিশুকে শিক্ষা প্রদান করছে ভাসমান নৌকা স্কুল। পাশাপাশি তিনটি নৌকা দিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নের সপ্তাহে একদিন করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও কৃষি সেবা প্রদান করা হয়। বিনা মূল্যে শিক্ষা কার্যক্রমসহ প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও ৩৬ প্রকারের ঔষধ প্রদান করছে। সপ্তাহে একদিন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রতিদিন প্রতিটি নৌকাতে তিনজন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে ৭০ জন মহিলা শিক্ষক পাঠদান করছেন। আধুনিক বিশ্বের সাথে গ্রাম অঞ্চলের এই শিশুদের পরিচিত ঘটাতে প্রতিটি নৌকাতে রয়েছে একটি করে কম্পিউটার আর শিক্ষা সহায়ক লাইব্রেরী। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে এই ভাসমান নৌকার কার্যক্রম শুরু হয়ে চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। প্রতিটি নৌকায় তিনজন শিক্ষক, একজন কম্পিউটার অপারেটর ও একজন মাঝি দায়িত্ব পালন করছেন।

চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বৃদ্ধ আয়সা বেগম জানান, “আমরাতো গ্রামের মানুষ, শরির খারাপ হলি নদী পারি দিয়ে হাসপাতালে যাওয়া অনেক কষ্ট হয়। এখন এই নৌকায় হাসপাতাল আসাতে আমারেতো ভালোই হইছে। বিনা মূল্যে ডাক্তার দেখাবের পারতিছি কিছু ঔসুধও দেয়। কষ্টোকরে আর শহরে যাওয়া লাগে না।”

বিলপারের কৃষক আছির উদ্দিন মোল্লা জানান, “আমারা সব সময় কষ্ট করে যাচ্ছি। নদী এবং বিল এই নিয়ে আমারে জীবন। পানি থাকলি ভালো হয়। সহজে সব জাইগায় যাওয়া যায়। আমাদের ছেলে মেয়েদের পড়া শুনার জন্য এলাকায় কোন স্কুল- মাদ্রাসা নাই, নৌকায় স্কুল বানায়ে বাড়ির কাছে শিক্ষা দেচ্ছে, চিন্তা করা লাগে না আর স্কুল নিয়ে। এই নৌকা স্কুল আসার পর থেকে আমাদের গ্রামের ছেলে মেয়েরা এখন প্রতিদিন স্কুলে যায়।”

নৌকা স্কুলের ব্যতিক্রম কার্যক্রমের বিষয় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ রেজওয়ান জানান, ছোট বেলা থেকে ইচ্ছা ছিলো গ্রাম অঞ্চলের সাধারন মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করার। আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি তাদের জীবন যাপন। সমাজের এবং রাষ্ট্রের অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে এই বিল ও নদী পারের মানুষ গুলো বঞ্চিত হয়। ২০০২ সালে আমার শিক্ষা জীবনের বৃত্তির ৩ লাখ টাকা আর এক বিদেশী বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া ৫শত ডলার নিয়ে একটি নৌকা দিয়ে যাত্রা শুরু করি। এর পর থেকে আর পেছেন তাকাতে হয়নি। যোগাযোগ করেছি বন্ধু দেশ গুলোর সাথে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন যুক্ত রাষ্টের গেটস ফাউন্ডেশন। তারা আমাদের এই কার্যক্রমকে সুন্দর এবং আধুনিকরন করতে দিয়েছেন একশত ডেক্্রটপ কম্পিটার ও ১৬টি ল্যাপটপ। সম্প্রতি আমাদেরকে আরোদুটি নৌকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন টারকিস কোপারেশন এন্ড কওডিনেশন এজেন্সি নামে একটি তুর্কিজ প্রতিষ্ঠান। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটি বিল অঞ্চলের মানুষের সেবায়ও নিয়োজিত রয়েছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমি গ্রাম অঞ্চলের মানুষের সেবায় কাজ করতে যেতে চাই। গ্রাম অঞ্চলের মানুষের ভালবাসাই আমার কাজের প্রেরনার উৎস। সব মহলের সহযোগিতা পেলে তিনি আরও এগিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com