বাংলা৭১নিউজ,(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শনিবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের দুপক্ষ বিজয় ও সিএফসি’র মধ্যে সংঘর্ষের পর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সোহওয়ার্দী হলের সামনে থেকে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তারা ছাত্রলীগ কর্মী কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আটকরা হলেন- ইতিহাস বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মোখলেসুর রহমান ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফারদিন রায়হান। এ সময় একটি সিএনজি ট্যাক্সি ধাওয়া দিয়ে এক বস্তা পাথরও জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়ার ঘটনার পর বিকেলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী হলে পাথর নিয়ে একটি সিএনজি এলে এক বস্তা পাথর জব্দ করা হয়। এসময় দুজনকে আটক করা হয়। তাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে সিএনজিচালকের বরাতে পুলিশ জানায়, ফের সংঘাতের লিপ্ত হতে ২নং গেটের রেললাইন থেকে এসব পাথর হলে নিয়ে আসা হয়। এর আগে দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সিএফসি পক্ষের শোয়াইবুর রহমান কনক ও জাহিদুল হাসান নামে দুইজন আহত হন।
কনক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ ও জাহিদুল প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে কনক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দুপুরে বিজয় গ্রুপের সদস্যরা সোহরাওয়ার্দী হলে ঢুকতে চাইলে সিএফসি গ্রুপের সদস্যরা তাদের বাধা দেয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুই গ্রুপের সদস্যরাই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলের অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এরপরও দফায় দফায় ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে ক্যাম্পাসে দুই গ্রুপের উত্তেজনায় সকাল থেকে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। দুর্বৃত্তরা শাটল ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দেয়ায় ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে ট্রেনের চালক খোরশেদুল আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
এ দিকে ভোরে শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাসের চাকা পাংচার ও সুপার গ্লু লাগিয়ে দেয়ায় কোন বাস চলাচল করতে পারেনি।
এছাড়া চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলকে অছাত্র ও হামলার পরিকল্পনাকারী উল্লেখ করে তাকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত চবি ছাত্রলীগের একাংশ বিজয় গ্রুপ অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় বিজয় পক্ষের চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচএম তারেকুল ইসলাম। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর ট্রেন চলাচলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মী আহত হন। বিবাদমান দুটি পক্ষ হচ্ছে, বিজয় ও সিএফসি গ্রুপ। তারা শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। বিজয় পক্ষের নেতৃত্বে আছেন সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচএম তারেকুল ইসলাম ও সিএফসি পক্ষে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল।
বাংলা৭১নিউজ/এফএ