চট্টগ্রামের উত্তর কাট্টলীতে একই পরিবারের নয়জন দগ্ধ হয়েছেন। রোববার রাত ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পেয়ারা বেগম (৬৫) মারা গেছেন।
দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন- মিজানুর রহমান (৪২), সাইফুর রহমান (১৯), বিবি সুলতানা (৩৬), শিশু মানহা (২), মাহের, পেয়ারা বেগম (৬৫), রিয়াজ (২২), জাহান (২১) ও সুমাইয়া (১৮)।
চমেক হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে মিজানুরের শরীরের শতকরা ৪৮ ভাগ, সাইফুরের ২২, সুলতানার ২০, মানহার ২০, মাহেরের ৫, পেয়ারার ৬০, রিয়াজের ১৮, জাহানের ১২ ও সুমাইয়ার ১৫ ভাগ পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
সোমবার (৯ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ কন্ট্রোলরুমের পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম।
এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি হাসপাতালেও যান।
সেখানে তিনি সাংবাদিকদের জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কার কোনও গাফিলতি থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে ঘরের প্রতিটি জায়গায় আগুনের ছাপ রয়েছে। তবে চুলা অক্ষত রয়েছে।
চট্টগ্রামের কাট্টলীপাড়ায় মরিয়ম ভবনে ভাড়া থাকতেন শিপিং করপোরেশনে চাকরিজীবী মিজানুর রহমান। এ দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী ছোট দুই শিশু সন্তান, মা এবং ভাইবোনও দগ্ধ হন। তাদের সঙ্গে থাকা দুজন সাবলেটও দগ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। শিশু ছেলেটির বয়স পাঁচ বছর ও মেয়েটির বয়স দেড় বছর। তাদের মা ফেনীর একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। করোনাকালীনে ছুটিতে তিনি তাদের সঙ্গে ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এবং প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেশির ভাগ জনের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল থেকে তাদের চিকিৎসার জন্য সব ধরনের সাহায্য করা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হতে পারে।
নগরের আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন বলেন, আগুনে এক পরিবারের সাতজনসহ মোট নয়জন দগ্ধ হয়েছে। কীভাবে আগুনের ঘটনা ঘটেছে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুন লেগেছে বলে মনে হচ্ছে। ভবনের প্রতিটি রুমে আগুনের চিহ্ন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এএম