চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে গাজীপুর মহানগরীর জিরানি ও চক্রবর্তী এলাকায় ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা আজও (মঙ্গলবার) বিক্ষোভ শুরু করেছেন। সড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারীরা। সড়ক বন্ধ থাকায় অনেকেই বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন।
কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, অক্টোবর মাসের বেতনের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। সকালে কারখানার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চন্দ্রা নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয় দিকে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিক লিয়াকত হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছি না। মাস প্রায় শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অক্টোবর মাসের বেতন পাইনি। বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
শ্রমিক রোকসানা পারভীন বলেন, বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। বেতন পেলেই আমরা কাজে ফিরবো।
অপরদিকে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে সারাব, জিরানিসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাও রয়েছে।
সোমবার থেকে ডরিন ফ্যাশন কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। রাত ১১টার দিকে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে গেলেও মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শ্রমিকরা আবারও জিরানি এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন।
ডরিন ফ্যাশনের অপারেটর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১ নভেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখে। গত রোববার খুলে দেওয়া হলেও দুপুরের পর আবার ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার শ্রমিকরা সকালে কাজে যোগদান করতে গিয়ে দেখেন কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা হয়নি, তারপরও কেন কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে বেক্সিমকো ও ডরিন ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ না দেওয়ায় অ্যামাজান নীট নামে একটি পোশাক কারখানা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে আজও কাশিমপুর জিরানি এলাকায় অন্তত দশটি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের মতো আজও শ্রমিকরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আশপাশের এলাকায় থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ