জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন উচ্চ আদালত। এর মধ্যে ছয় বছর সাজা পার করেছেন তিনি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ আদালতের রায়ে কারাগারে যান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তার কারাভোগের ছয় বছর শেষ হয়েছে। তবে দিনটিতে একেবারেই নীরব ছিল বিএনপি। দলটির নেতারা সংবাদ সম্মেলন, আলোচনা সভা করলেও, চুপ থেকেছেন খালেদা জিয়ার বিষয়টি নিয়ে।
কারাগারে যাওয়ার প্রায় দুই বছর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। তখন সরকারের কাছে পরিবারের আবেদনের পর শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর আবেদনের পর মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার।
সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মেয়াদ নবায়ন ও প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। আগামী মার্চে সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে আবারও আবেদন করার উদ্যোগ নেবে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিকালে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। পরে মধ্যরাতে বাসায় ফেরেন তিনি।
এ নিয়ে তার চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘উনার যে সুস্থতা এটা ক্ষণিকের সুস্থতা। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে তিনি আরও সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে তার পরিবারও মনে করে।’
আবেদন প্রসঙ্গে শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পারিবারিকভাবে আবেদন করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কীভাবে সুপারিশ করে, তারপর বলা যাবে।’
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, বরাবরই ৮ ফেব্রুয়ারি দলের নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন, দিনটি স্মরণ করেছেন। এবার তা ঘটেনি। প্রায়ই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা বলতেন। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারিও খালেদা জিয়াকে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এবার তিনি কারাগারে আছেন।
দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের ভাষ্য, ‘দিনটি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তির কাছে রক্তক্ষরণের, আমরা কেউ সহজে মেনে নিতে পারি না।’
দিনটিতে বিএনপির নীরবতা সম্পর্কে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কালকে (বৃহস্পতিবার) ম্যাডামকে হাসপাতালে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো। আসলে আমরা নীরব নই।’
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়ার প্রথমে পাঁচ বছরের সাজা হয়। পরে সাজা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে দুদক আবেদন করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ