বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাতক্ষীরায় পাউবো’র কাজে দূর্নীতি: ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রতিমন্ত্রীর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক টিসিবির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল কিনছে সরকার কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মৌলভীবাজারে দুজনের মৃত্যুদণ্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতা চালাতে পাহাড়ে আস্তানা গাড়েন আরসা সদস্যরা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্তদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সুপারিশ ২য় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫৪৫৬ প্রার্থী ফের চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, একদিনে কাড়লো ৩ প্রাণ খালে ময়লা ফেললে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে: মেয়র আতিক ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্বকাপ খেলতে রাতে দেশ ছাড়ছে বাংলাদেশ দল গাইবান্ধায় ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলন জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার কুড়িল বিশ্বরোডে পোশাক শ্রমিকদের অবরোধ, তীব্র যানজট দেশের ১৩ গুণীজনকে সম্মাননা প্রদানের উদ্যোগ রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে এক লাখ ৭০ হাজার টন সার কিনবে সরকার খুলনা বিভাগে বিদ্যুতের ২৫টি উপকেন্দ্র, ব্যয় হবে ৬০৮ কোটি টাকা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র আত্মসমালোচনা ছাড়া প্রকৃত মানুষ হওয়া সম্ভব নয়: ধর্মমন্ত্রী

কার কত নুন দরকার, বলে দেয় বিএসএফ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯
  • ১৭৮ বার পড়া হয়েছে
চর বালাভুতে গ্রামবাসীদের তৈরি সেই বাঁধ। ছবি: শুভ কর্মকার।

♦গরু খায়, না বাংলাদেশে পাচার হয়, জানা আছে

♦মোদীজিকে আর এক বার আসতে দে, ঠিক হয়ে যাবি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর অতিবাড়াবাড়ি কারণে শুধু যে বাংলাদেশের মানুষই অসন্তুষ্ট এমনটি নয়; খোদ ভারতেও বিএসএফ’র আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতীয় নাগরিকদের সাথে তাদের ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বেড়েই চলছে। বিএসএফ’র এমন বৈরি ও অমানবিক আচরণ নিয়ে কলকাতার বহুল প্রচারিত দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা ‘কার কত নুন দরকার, বলে দেয় বিএসএফ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।প্রতিবেদনটিতে মুসলমান এবং বাংংলাদেশের প্রতি বিএসএফ’র বৈরি মনোভাব ফুটে উঠেছে। 

প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘‘নুন! তিন কেজি! কেন রে?’’ বিএসএফ জওয়ানটি বৃদ্ধ সাজাহান আলির বাজারের ব্যাগ থেকে নুনের প্যাকেট বার করতে করতে দাঁত খিঁচিয়ে উঠলেন, ‘আমাদের তো এক কেজিতে তিন মাস চলে যায়। তোর ধান্দাটা কী?’

সাজাহান বিড়বিড় করল, ‘‘বাড়িতে গরু আছে। গরু খায়।’’ ‘‘ওখানে,’’ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানটি এক সহকর্মীকে আঙুল তুলে দেখালেন, ‘‘রেখে দে। এক কেজির বেশি নিতে দিবি না। গরু খায়, না বাংলাদেশে পাচার হয়, জানা আছে।…..আরে, তোর ব্যাগে তো শুঁটকিও দেখছি। কত আছে?’’

ভয়ার্ত সাজাহান বললে, ‘‘দু’কেজি।’’ জওয়ান বললেন, ‘‘বাজারে ফেরত দিয়ে আয়। পাঁচশোর বেশি নেওয়া যাবে না।’’

দু’এক জন গ্রামবাসী বলল, ‘‘না, শুঁটকি তো প্রায়ই লাগে। যেতে দেন, কত্তা।’’

জওয়ান আরও কড়া হলেন, ‘‘যেতে দেব? অসম দেখেছিস, ঠিক হয়ে গিয়েছে। মোদীজিকে আর এক বার আসতে দে, ঠিক হয়ে যাবি।’’

এ সব জায়গায় শহর থেকে আসা উটকো রিপোর্টারের কথা বলতে নেই। শুধুই চুপচাপ দৃশ্যের জন্ম দেখে যেতে হয়। দৃশ্য যে কত! নৌকোয় কালজানি নদী পেরিয়ে চর বালাভূত গ্রামে যাওযার আগে বিএসএফ আমার আধার কার্ডটিও জমা নিয়ে রেখে দিয়েছিল। গ্রাম থেকে ফের নদী পেরিয়ে এ পারের ক্যাম্পে এসে সেই কার্ড ফেরত পেয়েছি। লাদাখ থেকে অরুণাচল কোত্থাও যেতে এ ভাবে আধার বা ভোটার আইডি জমা রাখতে হয় না, এই জায়গাটাই ব্যতিক্রম।

ব্যতিক্রমী এই চর বালাভূত গ্রামটা পাকিস্তানে নয়, ভারতেই। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ থেকে চল্লিশ মিনিট গাড়িতে এসে তার পর নৌকোয় নদী পেরোনো। ১৮০০ ভোটারের বাস, প্রত্যেকেই মুসলমান। বাজারহাট, হাসপাতাল যাতায়াতে নৌকোই ভরসা। গ্রামে পাকা রাস্তা নেই, নেই বিদ্যুৎ। সন্ধ্যার পর আজও হ্যারিকেনই ভরসা। সরকারি প্রচেষ্টায় কয়েক বছর আগে হাসপাতালের নতুন বাড়ি হয়েছে, সেখানে ডাক্তার নেই। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে। সপ্তাহে দু’দিন দাতব্য চিকিৎসালয়ে এক কম্পাউন্ডারবাবু বসেন, বিপদেআপদে তিনিই ভরসা। রাতবিরেতে মেয়েদের প্রসববেদনা উঠলে ডাক্তারের পাশাপাশি বিএসএফকে জানাতে হয়। বিএসএফ অনুমতি দিলেই তো রাতে নৌকো এ পারে আসবে! 

গ্রামে রবিউল ইসলামের মুদির দোকানের মাসকাবারি খাতাটি কলমের দাগে শতচ্ছিন্ন। লেখা ছিল, তিন কেজি তালমিছরি। সেটি কেটে এক কেজি। তিন পিস সাবান কেটে এক পিস। মোদীজির ভয় দেখানো, কথায় কথায় দেশবাসীর মধ্যে স্মাগলার খোঁজা বিএসএফ-ই কাটাকুটি করে মুদিখানার চূড়ান্ত তালিকা বানিয়ে দিয়েছে।  ‘‘বিয়ে-শাদিতে লোক খাওযাতে আগে গোমাংস আনা যেত, এখন সেটাও আনা যায় না,’’ বলছিলেন এক গ্রামবাসী। গ্রামে পালাপার্বণে, ধর্মীয় উৎসবে জামাত বা ইসলামি শিক্ষার আসর বসাতেও ক’জন আসবেন, তাঁদের গ্যারান্টার কারা থাকবেন সব বিএসএফকে জানাতে হয়। গণতান্ত্রিক দেশে আমার ইচ্ছামাফিক যা খুশি খেতে, পরতে পারি, যেখানে ইচ্ছা যেতে পারি গোছের কথা পাঠ্য বইয়ে থাকে, চর বালাভূতের জীবনে নয়।

বিএসএফের বক্তব্য, বাংলাদেশ-লাগোয়া এই গ্রাম থেকেই গরু ও নানা জিনিস পাচার হয়। গ্রামবাসীরা বলছেন, বাইরের লোক যদি বালাভূত গ্রামে এসে পাচার করে, সে দায় আমরা কেন নেব? তাঁরা আরও বলছেন, সীমান্তে বিএসএফের টহলদারির জন্য রাস্তা আছে। তাঁরা সেখানে পাহারা না দিয়ে এই নদীর ধারেই বা কেন থাকেন? তিতিবিরক্ত গ্রামবাসীরা এ বিষয়ে তুফানগঞ্জের সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে স্মারকলিপি দিয়েছেন, এক দিন নৌকোঘাটও বন্ধ রাখা হয়েছিল।

যে গ্রাম বিএসএফের উপস্থিতি নিয়ে এত ক্ষিপ্ত, তারা নিশ্চয় ‘অ্যান্টি ন্যাশনাল’! নদী পেরেনোর পর গ্রামের মিজানুর রহমান তাঁর বাইকে চাপিয়ে আমাকে নিয়ে গেলেন অন্য দিকে। নদীতে আধডোবা কয়েকটি কাঠের খুঁটি। গ্রামের লোক নিজেরাই পঞ্চায়েতের নেতৃত্বে  প্রায় ৬ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে নদীতে বাঁধ দিয়েছেন।

এর নাম ভারতবর্ষ!

বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূূত্র:আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com