বাংলা৭১নিউজ, এসএম বাবুল বাবর, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সংস্কার কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। গত চার মাস ধরে লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরের বর্ডার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারসহ চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। মহাসড়কটিতে কার্পেটিং তুলে ফেলে রাখায় ধুলাবালুতে বাড়ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ।
লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরের বর্ডার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ৫৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৭ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজটি পায় কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। পরে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যৌথভাবে কাজে চুক্তিবদ্ধ হয় হাসান বিল্ডার্স ও মেসার্স সালেহ আহমেদ। তারা গত বছরের ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে। বাজেটে রাস্তার ধুলা-বালি রোধে পানি দেওয়ার জন্য বড় অংকের টাকা বরাদ্দ থাকলেও তারা রাস্তায় কোন পানি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন পথচারীসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা।
সড়কে যানবাহন দেখলেই ধুলাবালি থেকে বাচার জন্য পথচারী আর মোটরসাইকেল আরোহীরা সড়ক থেকে লাফিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছেন। বড় গাড়ি গুলো চলছে জানালা-দরজা বন্ধ করে, কিন্তু ধুলা থেকে নিস্তার নেই পথচারী আর ছোট যান গুলোর।
স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, ধীরগতির সংস্কারকাজের কারণে বাড়ছে এ সড়কে দুর্ঘটনা ও ধুলা বালির অত্যাচার। বর্ষাজুড়েই ছিল কাদাপানি আর খানাখন্দের দুর্ভোগ। এখন সড়কে বেরোলেই মুখোমুখি হতে হচ্ছে ধুলাবালির। ধুলাবালিতে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে সড়কের আশপাশের ভবন, দোকানপাট ও গাছপালা। এ সড়কে পথচারী আর যাত্রীদের চলাচল করতে হয় নাক ও মুখ চেপে। দেখে মনে হয় মরুভূমিতে বসবাস করছে মানুষ। সড়কে যাওয়া-আসা করতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশি শুরু দেখা দিচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই। সড়কে পানি না দিয়ে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছে মত কাজ করায় উন্নয়ন-ধুলায় শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে এলাকাবাসীর।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন, ধুলার দূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চোখের সমস্যা, সর্দি, কাশি, হাঁচিসহ বহু রোগী হতে পারে। গত চার মাস ধরে রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণেই নানা সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে সড়কের আশপাশের বাসিন্দারা।
রায়পুরের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রাইভেটকার নিয়ে রায়পুর থেকে লক্ষ্মীপুর যাত্রাপথে কালো রঙের গাড়ি ধুলায় ধূসর রং ধারণ করে। সড়ক প্রশস্তকরণের সময় পানি জন্য বড় অংকের টাকা বরাদ্দ তাকলেও পানি ব্যবহার না করায় ধুলাবালিতে চলাচলকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকি না থাকায় নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন ঠিকাদার। এচাড়াও সড়কের কিছুদূর পর পর এক লেন বন্ধ রেখে অন্য লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় রায়পুর থেকে লক্ষ্মীপুর পৌঁছাতে দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগে।
ঠিকাদার আজিজুল করিম বাচ্চু বলেন, একাধিক পানির লরি ও পাম্মের মাধ্যমে রাস্তায় পানি দেওয়া হচ্ছে, শুস্ক মৌসুমের কারনে পানি দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ায় পথচারিদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া সড়কের দু’পাশে সম্প্রসার করার জন্য মাটি রাখায় ধুলাবালু একটু বেশি হচ্ছে। সড়কের গাছ কাটাসহ বিভিন্ন কারণে কাজ কিছু ধীরগতি হচ্ছে। আগামী ২০-২৫দিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। প্রকল্প মেয়াদের আগেই কাজ শেষ হবে।
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানতে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস