এলডিসি পরবর্তী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাণিজ্য সম্প্রসারণে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ’ বাস্তবায়নে স্থানীয় বাজারের শিল্পগুলোকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিডা আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সবরকম সেবাকে একটি প্লাটফরমে আনতে ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর’ কাজ দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি শিল্পখাতে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপর জোর দেন আলোচকরা।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতি পাবে। সেসময় বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা উঠে যাবে। বর্তমানে মোট পোশাক রপ্তানির ৭৫ শতাংশ এ সুবিধা পাচ্ছে। বলা হচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে বাড়তি শুল্কের কারণে ১০ শতাংশের মত খরচ বাড়বে রপ্তানিকারকদের। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি এফটিএ’র ওপর জোর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, এফটিএ এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে সংশ্লিষ্ট দেশ বা অঞ্চলে আমাদের পণ্য রপ্তানিতে যেমন শুল্ক সুবিধা পাব; তেমনি তাদেরকেও আমাদের বাজারে শুল্ক সুবিধা দিতে হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষার নামে ব্যাপক হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করে রাখা যাবে না। তাই এ অবস্থায় আমি বলবো, স্থানীয় বাজারে পণ্য সরবরাহকারী শিল্পগুলোকেও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে। রপ্তানিকারকরা এখন বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করছে, তাই স্থানীয় বাজারের শিল্পকেও পারতে হবে। এজন্য, ব্যবসায়ীদের চিন্তা ভাবনায় পরিবর্তন আনতে হবে।
এসময়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জমান বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে গতি আনতে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এতে করে আমদানি-রপ্তানিতে শুল্কায়নসহ ছাড়পত্র পাওয়া সহজ ও দ্রুত হবে।
সহজে ব্যবসা সূচকে উন্নতি করতে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার অনলাইন সেবা সম্পর্কে প্রচারণার গুরুত্ব তুলে ধরেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর। তার মতে বর্তমানে অনেক সেবা সহজ হলেও উদ্যোক্তারা না জানায় ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের জরিপে সঠিক তথ্য দিতে পারছে না।
শিল্পখাতে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুত ব্যবহারের তাগিদ দিয়ে বিদ্যুত ও জ্বালানি’র অতিরিক্ত সচিব রহমতুল্লাহ মো. দস্তগীর বলেন, জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন লাইনসহ উৎপাদন দক্ষতা আগের তুলনায় বেড়েছে। তাই গ্যাস জেনারেটরে উৎপাদিত ক্যাপটিভ বিদ্যুতের পরিবর্তে শিল্পগুলো যদি জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুত নেয়, তাহলে দাম আরও কমানো সম্ভব।
বর্তমানে বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস-ওএসএস ৮ সংস্থার ৩৫টি সেবা দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তর, আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক কার্যালয়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আরও ৬ সেবা যুক্ত হলো।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস