রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের তালিকা প্রকাশসহ ৯ দাবি শেখ পরিবারের ছয় সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা ‘দেশের ৬ কোটি শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও মজুরির মানদণ্ড নেই’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে যে ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার মণিপুরে আসাম রাইফেলসের ক্যাম্পে হামলা উত্তেজিত জনতার রেমিট্যান্স আহরণে ‘গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেলো ইসলামী ব্যাংক মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ নতুন করে ভ্যাট আরোপ হবে সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্ত : জিএম কাদের মোবাইল-ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে এনবিআর ঘেরাও রমজান ও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করল আরব আমিরাত এবার মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন! ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব সাধারণ নির্বাচনকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ ও ঐতিহাসিক’ করতে চায় সরকার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জাকিরের ঝড়, সিলেটের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি কাউন্সিল নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত বগুড়া বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে হেনরীর জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেশে এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত ২৬ ফুট লম্বা স্যান্ডেল, গিনেসে নাম উঠছে সানিয়ার দীর্ঘমেয়াদী ও বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান

এবার মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন!

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

এবার মহাশূন্যে বাঁধ বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন। দেশটির এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। জানা গেছে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান রাখতে এই কাজে হাত দিতে চলেছে বেইজিং। যদিও এর বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিশ্বের তাবড় মহাকাশ গবেষকেরা।

সম্প্রতি মহাশূন্যে চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে চীনা সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’। এরপরই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাশূন্যে বাঁধ তৈরির নীল নকশা এঁকেছেন ড্রাগনল্যান্ডের বিখ্যাত রকেট বিজ্ঞানী লং লেহাও। এই প্রকল্পের পোশাকি নাম ‘থ্রি গর্জেস ড্যাম প্রজেক্ট অন আর্থ’।

কীভাবে মহাশূন্য বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করবেন ড্রাগনের বিজ্ঞানীরা? সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের ওই প্রতিবেদনে তার রূপরেখাও তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর জিওস্টেশনারি কক্ষপথে এক কিলোমিটার প্রশস্ত সৌর প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা করছেন চীনা মহাকাশ গবেষকরা।

মহাশূন্যে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ শেষ হলে সেগুলো দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে ড্রাগন। চীনা গবেষকদের দাবি, দিন-রাতের চক্র, আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনের জেরে এই সৌর প্যানেলের কোনও ক্ষতি হবে না। সব সময় সেখান থেকে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ।

চীনা মহাকাশ গবেষক লং বিদ্যুৎ তৈরির এই নিরবচ্ছিন্ন প্রকল্পকে তিন গিরিখাত বাঁধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বর্তমানে ড্রাগনল্যান্ডের ইয়াংজি নদীর উপর রয়েছে ওই বাঁধ। সেখান থেকে বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বেইজিং।

অন্যদিকে, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, চীনের এই তিন গিরিখাত বাঁধ এতটাই বড় যে, সেটি পৃথিবীর ঘূর্ণন ০.৬ মাইক্রসেকেন্ড কমিয়ে দিয়েছে। তাই এই ধরনের প্রকল্পকে মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা।

চীনা গবেষক লং বলেছেন, “আমরা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছি। ভূপৃষ্ঠের ২২ হাজার ৩৭০ মাইল উপরে জিওস্টেশনারি কক্ষপক্ষে ওই তিন গিরিখাত বাঁধ মতোই সৌর প্যানেল বসানো হবে। সেখান থেকে আমরা যে সৌরশক্তি পাব তা এক বছরে উত্তোলন করা অপরিশোধিত তেলের সমান হবে। এটা একটা অবিশ্বাস্য প্রকল্প। আমরা এখন শুধুই সামনের দিকে তাকিয়ে আছি।”

এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন। জানা গেছে, বর্তমানে এই বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন চীনা মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। পুনর্ব্যবহারযোগ্য ভারী বস্তু বহনে সক্ষম রকেট নির্মাণের চেষ্টা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গবেষক লং। তবে বেইজিং এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি শব্দও খরচ করেনি।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বিজ্ঞানী লং জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য মোট দু’টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন হবে। তার মধ্যে একটি হল ‘সিজেড-৫’। এটি লম্বায় ৫০ মিটার বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় রকেটটির নাম ‘সিজেড-৯’ রেখেছেন চীনা মহাকাশ গবেষকেরা। মহাশূন্যে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ দ্বিতীয় রকেটটি করবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী লং।

লংয়ের কথায়, “সিজেড ৯-এর উচ্চতা হবে ১১০ মিটার। এটি ১৫০ টন পর্যন্ত সামগ্রী বহন করতে পারবে। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে সৌর প্যানেল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে যা আদর্শ। নাসার ‘স্যাটার্ন-৫’ এবং স্পেস লঞ্চ সিস্টেমে যে সমস্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রকেট রয়েছে, সেগুলো ১৩০ টন পর্যন্ত সামগ্রী বহন করতে পারে।” চীনা রকেট সেখানে রেকর্ড তৈরি করবে বলে মনে করেন তিনি।

ড্রাগনল্যান্ডের মহাকাশ গবেষকের এ ধরনের বক্তব্য মোটেই কল্পবিজ্ঞানের কাহিনি নয়। চীনের এই ধরনের প্রকল্পের বিষয়ে আগেও আলোচনা করেছে দুনিয়ার তাবড় শক্তিশালী দেশ। পৃথিবীতে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সৌরশক্তিকেই বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন গবেষকেরা।

পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তি কেন্দ্রগুলো এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ভূপৃষ্ঠে পাঠিয়েও থাকে। আন্তর্জাতিক স্তরে এর নাম ‘ম্যানহাটন প্রকল্প’। চীন এই ধরনের কাজই মহাশূন্যে করতে যাচ্ছে বলে মনে করেন গবেষকদের একাংশ। তবে নিঃসন্দেহে তা অনেকটা বড় আকারের হবে বলে স্পষ্ট করেছেন তারা।

গত কয়েক দশক ধরেই সৌরশক্তি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে মহাশূন্যকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তাই নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তারা। চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গবেষণার নতুন দিক খুলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত শতাব্দীর স্নায়ু যুদ্ধের সময়ে মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে লড়াতে নেমেছিল আমেরিকা। বর্তমানে এই দৌড়ে সামিল হয়েছে চীনও। ইতোমধ্যেই মহাশূন্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করেছে ড্রাগন। এবার সেখানে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অনেকটাই পিছনে ফেলে দেবে, তা বলাই বাহুল্য। 

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টএনডিটিভিইন্ডিয়াগ্লোবাল কনস্ট্রাকশন রিভিউ

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com