বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা :নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রতি কৃতজ্ঞ বিএনপি। এখন দলটি আশা করছে, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও একইভাবে উদ্যোগ নেবেন রাষ্ট্রপতি।
সকালে রাজধানীতে এক আলোচনায় এই প্রত্যাশার কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনও কিছু করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ধন্যবাদ জানান মির্জা ফখরুল।
গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন গঠনে সব দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতিকে আলাপ-আলোচনার প্রস্তাব দেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তার দাবি, সব দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন হতে হবে। গত ৩ ডিসেম্বর এই ১৩ দফা প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে দেয় বিএনপি।
এর নয় দিন পর সোমবার বঙ্গভবন থেকে আলোচনার জন্য বিএনপিকে চিঠি পাঠানো হয়। এতে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে বঙ্গভবন যাচ্ছেন। তিনি আশা করেন, তাদের দলের উত্থাপিত ১৩ দফার আলোকেই হবে এই আলোচনা এবং একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
এই ১৩ দফা উত্থাপনের দিন খালেদা জিয়া এও বলেছিলেন যে, নির্বাচন কমিশন যতই নিরপেক্ষ হোক না কেন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার নিরপেক্ষ না হলে তারা কাজ করতে পারবে না। এই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার নিয়েও একটি রূপরেখা দেয়ার কথা জানান খালেদা জিয়া।
মির্জা ফখরুলও একই কথা বলেন। আর নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার মতো এই সহায়ক সরকার গঠন নিয়েও রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করেন তিনি।
১৯৯১ এরশাদ সরকারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয় নির্বাচন। তবে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে এটা সংবিধানের অংশ করা হয়। এর পরের তিনটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হয়। তবে এই সরকার ব্যবস্থা সংবিধানবিরোধী-সর্বোচ্চ আদালত থেকে এমন রায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার তার আগের মেয়াদে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দেয়। আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই হয় দশম সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি-জামায়াত জোট প্রায় তিন বছর আগের ওই নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপি তার আগের অবস্থানের মতোই আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার চাইছে। তবে এটা তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকার হতে হবে- এমন অবস্থান থেকে দলটি কিছুটা সরে এসেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এন